তথ্যপ্রযুক্তি

হ্যাকিং থেকে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাকাউন্ট সুরক্ষার উপায়

প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও অগ্রগতি আমাদের জীবনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ। বর্তমানে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপের কারণে আমাদের জীবন আরও সহজ হয়েছে। যেখানে চাইলেই যে কারও সঙ্গে যে কোনো সময় যোগাযোগ করা যায়।

Advertisement

তবে প্রত্যেকটি উদ্ভাবনেরই যেমন নেতিবাচক দিক রয়েছে, তেমনি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপগুলোরও কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। যেমন- যে কোনো সময় হ্যাক হতে পারে বা এখান থেকে তথ্য বেহাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই তো ডিজিটাল যুগে যখন আমরা প্রতিদিনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছি, তখনই তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি সামনে এসেছে। যেন আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যগুলো বেহাত হয়ে না যায়।

এক্ষেত্রে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে ব্যবহারকারী ও ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। হ্যাকিং রোধে তথ্যের গোপনীয়তা ও সুরক্ষার্থে বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপগুলোর সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ইমো’র কথা। হ্যাকিং ঠেকাতে একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ ইমো।

সম্প্রতি বিভিন্ন ধরনের সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং সামনের দিনগুলোতেও তাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ ইমো ব্যবহারকারীদের সুরক্ষিতভাবে যোগাযোগের বিষয়টিকে নিশ্চিত করেছে। এ লক্ষ্যেই ইমো সম্প্রতি ‘ফ্ল্যাশ কল’ নামে একটি ফিচার চালু করেছে।

Advertisement

যেখানে ওটিপি’র (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পরিবর্তে ফোন-কল ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে লগ ইন প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত করা হয়েছে। যা ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হওয়া থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করবে। যদি ব্যবহারকারীরা প্রথমে ফ্ল্যাশ কল বেছে না নেন। তাহলে তাদের রিমাইন্ডারসহ (যেখানে ভেরিফিকেশন কোড কারও সঙ্গে শেয়ার না করার জন্য বলা হবে) বিকল্পভাবে ওটিপি পাঠানো হবে।

এখানে ব্যবহারকারীদের জন্য মাল্টি ডিভাইস লগ ইন নোটিফিকেশন ফিচারও রয়েছে। ডিভাইসে লগ ইনের কোনো প্রচেষ্টা হলে ব্যবহারকারীরা ‘ম্যানেজ ডিভাইস’ সেটিংস এ গিয়ে এ সংক্রান্ত সম্পূর্ণ তথ্য পাবেন, যার মধ্যে ডিভাইসের তথ্য, স্থান ও সময়ও উল্লেখ থাকবে; এতে করে ব্যবহারকারীরা সন্দেহজনক যে কোনো কিছু মুছে ফেলতে পারবেন।

এছাড়াও নতুন লগইন করা ডিভাইস রেস্ট্রিক্ট করার মতো অস্বাভাবিক ঘটনায় এবং অস্বাভাবিক কোনো প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ওই অ্যাকাউন্টের ফ্রেন্ড লিস্টে ব্যবহারকারীদের কাছে বার্তা পাঠানো হবে। যা তথ্য সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর নম্বর পরিবর্তন কিংবা অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলে নতুন ডিভাইসে লগ ইন করার মাধ্যমে অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করা যেতে পারে।

জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যবহারকারীরা গড়ে এ ধরনের ছয়টি ঘটনা শনাক্ত করেছেন। উন্নত বহুমাত্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমের মাধ্যমে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এ ধরনের ঘটনা গড়ে মাত্র একটি ঘটেছে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ইমো দু’টি হ্যাকিং গ্রুপকে শনাক্ত করে ব্লক করেছে। ২৪/৭ ডেপ্লয়মেন্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে যাদের শনাক্ত করা হয় এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

Advertisement

ফোন নম্বর, এসএমএস কোড এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের এর মতো আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদের অবশ্যই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপগুলোতে নিজের সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে: প্রথমত, পাসওয়ার্ড শেয়ার না করা এবং ওটিপি’র তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা।

দ্বিতীয়ত, যদি আপনি একটি বন্ধুর অ্যাকাউন্টের সঙ্গে একটি অস্বাভাবিক সন্দেহজনক কার্যকলাপ ঘটতে দেখেন, অবিলম্বে তাদের সতর্ক করুন এবং এই সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আপ-নার নিজের তথ্য শেয়ার করবেন না। তৃতীয়ত, একজন ব্যবহারকারীর তার ডিভাইসগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে, সন্দেহজনক কিছু ঘটলে তা মুছে ফেলার জন্য দ্রুত সেটিংস পরিবর্তন করতে হবে এবং চতুর্থত, অ্যাপের ভেতরে যে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করতে হবে।

ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রতিটি অ্যাপ তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। তবে ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে চলাও অতি গুরুত্বপূর্ণ। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই হ্যাকারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে একটি সুরক্ষিত অনলাইন পরিসর তৈরি করা যাবে।

কেএসকে/জেআইএম