আলোর বাধায় ছায়া তৈরি হয়। বাধা সৃষ্টিকারী বস্তুর আকার আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সাথে তুলনীয় না হলে আলো তার বংশ বিস্তারের পথে বাঁকায় না। রোদে দাঁড়ালেই মাটিতে আপনার ছায়া দেখতে পাবেন। বিশ্বের যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে সূর্যের আলোয় আপনার ছায়া তৈরি হবেই। তবে এই সূত্র সব ক্ষেত্রে কাজ করবে না।
Advertisement
অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? অংকের হিসাবে বিজ্ঞানীরা যে কোনো ভৌগলিক স্থান শনাক্ত কিংবা নির্দিষ্ট করতে অক্ষাংশ কিংবা দ্রাঘিমাংশ দিয়ে পৃথিবীকে কয়েকটি রেখায় ভাগ করেন। সেই হিসেবে পৃথিবীতে ৩টি পূর্ব-পশ্চিম বিস্তৃত রেখা (কর্কটক্রান্তি, মকরক্রান্তি ও বিষুবরেখা) আর একই রকম ৪টি রেখা (০ ডিগ্রি, ৯০ ডিগ্রি, ১৮০ ডিগ্রি ও ২৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা) রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণে।
এই ৪টি উত্তর-দক্ষিণ রেখা ও ৩টি পূর্ব-পশ্চিম রেখা সবমিলিয়ে মোট ১২টি স্থানে পৃথিবীকে ছেদ করেছে। এই ১২ বিন্দুর ১০টিই পড়েছে সাগর আর মহাসাগরে। আর ২টি পড়েছে পৃথিবীর স্থলভাগে। স্থলভাগের ১টি পড়েছে সাহারা মরুভূমিতে, যেখানে মানুষ সবসময় যেতে পারেনা।
আরেকটি পড়েছে এমন জায়গায় যেটি বাংলাদেশেই। জেনে অবাক হবেন বৈকি। সেই স্থানটি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গার সদরপুর উপজেলায়। সতত্যা যাচাই করতে গুগল আর্থেও খোঁজ করতে পারেন। আপনার মোবাইল থেকে গুগল আর্থে গিয়ে 23.5N90E লিখে সার্চ দিলে কর্কটক্রান্তি দ্রাঘিমাকে কোথায় ছেদ করেছে তা আপনি সরাসরি দেখতে পারবেন।
Advertisement
পৃথিবীর যে কোনো স্থানে সূর্যের আলোয় আপনার ছায়া তৈরি হলেও এই স্থানটিতে হবে না। তবে তা সারা বছরের জন্য নয়। মাত্র একদিনই এমনটা হয়ে থাকে। বছরের একটি বিশেষ দিনে এই স্থানে সূর্যের আলোয় আপনার কোনো ছায়া তৈরি হবে না।
প্রতিবছরের ২১শে জুন দুপুর ১২টায় এই অঞ্চলে কারও ছায়া পড়ে না মাটিতে। আকাশ মেঘমুক্ত এবং সূর্য ঠিক তার মাথার উপরে থাকলেও কারোর ছায়া পড়বে না। যে ঘটনা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না।
এ কারণে অঞ্চলটিতে ২১ জুন দুপুরে এখানে ভিড় জমায় রোমাঞ্চপ্রিয় হাজারো মানুষ। সবাই পেতে চায় ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা। চাইলে আপনিও নিতে পারেন এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। নির্দিষ্ট দিনে চলে যান ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গার সদরপুর উপজেলায়। ঢাকা থেকে দূরত্বও খুব বেশি নয়।
কেএসকে/জেআইএম
Advertisement