শীত দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। এখন থেকেই সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জির সমস্যায় অনেকেই ভুগতে শুরু করেছেন! শীত এলেই বেড়ে যায় অ্যালার্জির সমস্যা। এ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ধুলাবালি ও বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। এর ফলে ত্বকে অ্যালার্জি সমস্যা দেখা দেয়।
Advertisement
অনেকের ক্ষেত্রেই অ্যালার্জি মারাত্মকভাবে প্রকাশ পায়। ধুলাবালি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাবার এমনকি ওষুধের প্রতিক্রিয়াতেও অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। ধরুন ঘর ঝাড়ু দিচ্ছেন কিংবা পরিষ্কার করছেন, এরই মধ্যে হাঁচি ও পরে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
বিভিন্ন খাবার যেমন গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ, ইলিশ, গরুর দুধ, বেগুন ইত্যাদি খেলেও অনেকের শরীরে চুলকানি শুরু হয়। এর থেকে র্যাশ ওঠে ও ত্বকের বিভিন্ন স্থান ফুলে যায়। অনেকের আবার ফুলের ঘ্রাণ নেওয়ার সময় অস্বস্তি হয়। এসব ঘটলে বুঝতে হবে আপনার অ্যালার্জির সমস্যা আছে।
অ্যালার্জি কী?
Advertisement
সবার শরীরেই একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম থাকে। কোনো কারণে এই ইমিউন সিস্টেমে গোলযোগ দেখা দিলে তখনই অ্যালার্জির বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস দুই ধরনের- সিজনাল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস। যা বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘটে। একে সিজনাল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বলা হয়।
অন্যটি পেরিনিয়াল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস। যা সারাবছরই দেখা দেয়। অ্যালার্জিজনিত সর্দি বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর উপসর্গ হলো- অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারও কারও চোখ দিয়েও পানি পড়ে ও চোখ লাল হয়ে যায়।
যদি আপনার সিজনাল অ্যালার্জি থাকে তাহলে শীতের সূচনাকালেই সচেতন থাকতে হবে। এজন্য ঘরোয়া কয়েকটি উপায়ে ভরসা রাখতে পারেন। তবে অ্যালার্জির বাড়বাড়ন্ত দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জেনে নিন অ্যালার্জি কমানোর ঘরোয়া ৫ উপায়-
Advertisement
এয়ার ফিল্টার
আপনি যদি অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন তাহলে ঘরে অবশ্যই একটি এয়ার ফিল্টার রাখা উচিত। এক্ষেত্রে উচ্চ-দক্ষতাসম্পন্ন পার্টিকুলেট এয়ার ফিল্টারগুলো সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
এয়ার ফিল্টারের কাজ হলো ঘরের বাতাসকে ফিল্টার করা। পরাগ, ধূলিকণাসহ পোষ্যের শরীরের লোম ইত্যাদি অ্যালার্জেন বস্তুকে ফিল্টার করে এয়ার ফিল্টার। এতে অ্যালার্জির সমস্যা অনেকটাই কমে।
ভিটামিন সি
শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা সব সময়ই পাতে রাখা চায় ভিটামিন সি। সবারই জানা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অ্যালার্জি সাধারণত ইমিউন সিস্টেমের গোলযোগের কারণে ঘটে।
তাই প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের হিস্টামিনের মাত্রা কমাতে দৈনিক অবশ্যই ২০০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা উচিত।
পেপারমিন্ট অয়েল
১৯৯৮ সালের এক গবেষণা অনুসারে, পেপারমিন্ট অয়েলে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও শ্বাসনালীর সমস্যা, হাঁপানি ও অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলোও কমায়। অ্যালার্জির কারণে ত্বক লালচে হয়ে ফুলে ওঠা বা র্যাশ বের হলে এই তেল ব্যবহার করতে পারেন।
মধু
আয়ুর্বেদের তথ্য মতে, মধু খেলে অ্যালার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। এমনকি অ্যালার্জি থেকে হওয়া বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াও সারিয়ে তোলে মধু।
এজন্য প্রতিদিন অন্তত এক চামচ করে হলেও মধু খান। যদিও এ বিষয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
প্রোবায়োটিকস
২০১৫ সালের এক গবেষণা অনুসারে, প্রোবায়োটিক গ্রহণের ফলে অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের বিভিন্ন লক্ষণগুলো কমানো সম্ভব। এজন্য প্রোবায়োটিকস আছে এমন খাবার গ্রহণ করুন।
যেমন- টকদই। শরীরের জন্য টকদই কতটা উপকারী তা নিশ্চয়ই সবারই কমবেশি জানা আছে। এসব ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে অ্যালার্জি থেকে সহজেই বাঁচতে পারবেন।
সূত্র: হেলথলাইন
জিএমএস/জেআইএম