তথ্যপ্রযুক্তি

গাড়ির কিছু সাধারণ সমস্যা ও সমাধান

কথায় আছে শখের তোলা আশি টাকা। মানুষের শখের কমতি নেই। কারও পছন্দ বাগান করা, কেউ পছন্দ করে ঘোরাঘুরি, কেউ মোবাইল ফোনে আসক্ত আবার কারও পছন্দ নতুন নতুন গাড়ি সংগ্রহে রাখা।

Advertisement

বিলাসবহুল গাড়ি থেকে শুরু করে দামে সস্তা সব ধরনের গাড়ি সংগ্রহে রাখেন অনেকে। আবার প্রয়োজনের খাতিরেও চার চাকার গাড়ি কেনেন। যাতায়াতের সুবিধা ও সময় বাঁচাতে নিজের একটি গাড়ি খুবই জরুরি। তবে গাড়ি প্রয়োজনের চেয়ে শখ পূরণের জন্যই কেনেন বেশিরভাগ মানুষ।

আবার গাড়ি কেনার চেয়ে এর মেইন্টেনেন্স খরচটাই বেশি। যারা নতুন গাড়ি কিনেছেন বা কিনতে চাচ্ছেন তাদের জন্য একটু বেশিই সমস্যায় পড়তে হয়। গাড়ির নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে। কিছু সমস্যার সমাধান নিজে থেকেই করতে পারবেন। আবার কিছু কিছু সমস্যা আছে যার জন্য আপনাকে গ্যারেজ পর্যন্ত যেতে হতে পারে। তাহলে জেনে নিন গাড়ির কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং সেগুলোর সমাধান-

> গাড়ির একটি সাধারণ সমস্যা হলো ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া। সাধারণত পানির পাম্পে সমস্যা থাকলে, ইঞ্জিনের কুল্যান্টের পরিমাণ কমে গেলে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। ইঞ্জিনে কুল্যান্টের পরিমাণ কমে গেলে ইঞ্জিনের তাপমাত্রা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না। অনেক সময় কুল্যান্ট লিকেজের কারণে ইঞ্জিন গরম হয়ে যেতে পারে।

Advertisement

গাড়ির নিয়মিত পরিচর্যা না করার ফলে কুল্যান্টের পরিমাণ কমে যায়। তাই গাড়ির ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখতে নিয়মিত কুল্যান্টের মাত্রা পরীক্ষা করুন এবং গাড়ির পরিচর্যা করুন।

> গাড়ির ব্যাটারি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া। হঠাৎ করে গাড়ির ব্যাটারি বন্ধ হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গাড়ি ব্যবহার না করে চার্জে রেখে দেওয়া, ত্রুটিপূর্ণ চার্জিং, ত্রুটিপূর্ণ অল্টারনেটর। অনেক সময় দীর্ঘদিন গাড়ি ব্যবহার না করলে ব্যাটারির ওপর এর প্রভাব পরে।

এমন পরিস্থিতিতে পড়লে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো মেকানিকের সাহায্য নেওয়া। মেকানিক ব্যাটারি আলাদা করে চার্জিংয়ে রাখবে, যেন এর ব্যাটারি ফুল হয়ে যায়।

> নির্গমন পাইপে কালো ধোঁয়া বের হওয়ার অন্যতম কারণ হলো জ্বালানি পাম্পের সিলিং নষ্ট হয়ে যাওয়া। এছাড়া জ্বালানি ইঞ্জেকশন চাপ, সেটার নিঃসরণে সমস্যা হলেও এমনটা হতে পারে।

Advertisement

> অনেক সময় গাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বের না হয়ে সাদা বা নীল ধোঁয়া বের হয়। তেল ইঞ্জিনের সিলিন্ডারে ঢুকে গেলে এ সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া পিস্টন ও সিলিন্ডারের মধ্যকার ফাকা বেড়ে যাওয়াও একটি কারণ। পিস্টন রিংগুলো ঠিকমতো কাজ না করলেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

> মাঝে মাঝে দেখা যায় গাড়ি আগের গতি এবং সময়ই চলছে। কিন্তু জ্বালানি খরচ হচ্ছে বেশি। এক্ষেত্রে আগে গাড়ির চালক যদি অন্য কেউ হয় তাহলে সে কীভাবে গাড়ি চালাচ্ছে তা নজর রাখুন। যদি সেখানে সব ঠিকঠাক থাকে তাহলে গাড়ির সার্ভিসিং করিয়ে নিতেই হবে আপনাকে।

অনেকদিন গাড়ির সার্ভিসিং না করানোর ফলে স্পার্ক প্লাগ, O2 সেন্সর, ফুয়েল ইনজেক্টর এবং এয়ার ফিল্টারের মতো অংশগুলো নোংরা হয়ে আটকে যেতে পারে। যার ফলে এ সমস্যা হয়।

> ইঞ্জিনে তেলের স্তর কম হলে ইঞ্জিন ভালোভাবে পারফর্ম করতে পারে না। গাড়ির ঠিকমতো পরিচর্যা না করা এবং উল্টাপাল্টা ড্রাইভিংয়ের কারণে এমন হতে পারে। ইঞ্জিনে তেলের স্তর কম থাকা অবস্থায় গাড়ি চালানো গাড়ির জন্য ক্ষতিকারক। কারণ এটি ইঞ্জিনের অনেক উপাদানের ক্ষয়-ক্ষতি করে। তাই ইঞ্জিনের বড় কোনো ক্ষতি রোধ করতে হলে সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল টপ-আপ করা আবশ্যক।

> গাড়ির গতি কমে যাওয়ার সমস্যা হয় পেট্রল ইঞ্জিনের স্পার্ক প্লাগে সমস্যা হলে। এছাড়াও জ্বালানি সরবরাহ সিস্টেমে সমস্যা থাকলে। লিফট পাম্প কাজ না করলে, বাতাস ও জ্বালানি ফিল্টার ময়লায় জমে গেলে, জ্বালানি ইঞ্জেক্টর ঠিকভাবে কাজ না করলে। এমনটা হলে অবশ্যই ম্যাকানিকের কাছে নিয়ে যান।

> চলতি অবস্থায় হঠাৎ গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়া গাড়ির সমস্যার অন্যতম একটি। সাধারণত দুটি কারণে ইঞ্জিন বন্ধ হয়। একটা ইঞ্জিনের ভেতরের কারণ। আর একটা বাইরের কারণ। এছাড়াও গাড়িতে অতিরিক্ত লোড হলে, জ্বালানি সিস্টেমে বাতাস ও ময়লা জমলে এ সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ সমস্যা প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত গাড়ি সার্ভিসিং করতে হবে।

> অসতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর ফলে গাড়ির চাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া কেমন রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে তার ওপর ও নির্ভর করে। যে কোনো সময় গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে যেতে পারে । তাই ভ্রমণের সময় গাড়িতে অতিরিক্ত চাকা রাখতে হবে। এছাড়াও চাকা পরিবর্তন করার সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন।

সূত্র: ড্রাইভ স্পার্ক/ গো মেকানিক

কেএসকে/জেআইএম