সন্তান মহান আল্লাহর দেওয়া সেরা নেয়ামত। বাবা মার জন্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। কারণ দুনিয়াতে চেষ্টা করলে অনেক কিছুই পাওয়া যায় কিন্তু চাইলে সন্তান পাওয়া সম্ভব নয়। আর কন্যা সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে জান্নাতের প্রাপ্তির অনন্য এক উপায়। কন্যা সন্তানের ব্যাপারে কোরআন-সুন্নায় এসব সুসংবাদ ও প্রাপ্তির কথা ওঠে এসেছে। সেসব ঘোষণা ও সুসংবাদগুলো কী?
Advertisement
আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে কন্যা সন্তানের আগমনকে সুসংবাদ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সুসংবাদ হলো জান্নাতের দাওয়াতনামার সুসংবাদ। অথচ অজ্ঞতার যুগের মতো আজও কন্যা সন্তান জন্ম নিলে অনেকের মুখ কলো হয়ে যায়। অজ্ঞতার যুগে কন্যা সন্তান ও নারীর প্রতি বর্বর চিন্তা-ভাবনার মূলে কুঠারাঘাত করে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
‘যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা মুখ কালো করে এবং মনে অসহ্য কষ্ট ভোগ করতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে মানুষের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে (কন্যা সন্তানকে) থাকতে (বাঁচতে) দেবে, নাকি তাকে মাটির নিচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুরা নাহল : আয়াত ৫৮-৫৯)
‘আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস’ আজ। প্রতি বছরের মতো এবারো বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে দিবসটি। কন্যা শিশুদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে ‘ডিজিটাল জেনারেশন, আওয়ার জেনারেশন’, অর্থাৎ ‘ডিজিটাল প্রজন্মই, আমাদের প্রজন্ম’ স্লোগানে বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
Advertisement
যখন কন্যা শিশু ও নারীদের সামাজিক কোনো মর্যাদা ছিল না; তখন ইসলাম কন্যা শিশু ও নারীকে দিয়েছিল পৃথিবীর সেরা মর্যাদা। তাদের অধিকার রক্ষায় ইসলাম দিয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। কোরআন সুন্নায় কন্যা শিশুর প্রতি সুন্দর ব্যবহার ও উত্তম আচরণের জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
শিশু হত্যা মহাপাপ
মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে শিশুদের হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘তোমারা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করনা। তাদের ও তোমাদের রিজিক আমিই ব্যবস্থা করি।’ (সুরা আল-ইমরান ও বনি ইসরাইল)
শিশু হত্যার কারণ
Advertisement
চরম বর্বরতার যুগ আইয়্যামে জাহেলিয়াতে মানুষ ৩ কারণে শিশুদের হত্যা করতো। তাহলো-
১. অজ্ঞতার যুগে আত্মমর্যাদা রক্ষায় কন্যা শিশু হত্যার রেওয়াজ ছিল। জাহেলিয়াতের যুগে কন্যা শিশু জন্ম নেওয়া ছিল অপমান ও লজ্জাজনক ব্যাপারে। কন্যা শিশুর জন্ম হলেই বাবারা অপমান ও লজ্জার এ কুসংস্কার থেকে বাঁচতে কন্যা শিশুদের হত্যা ও জীবন্ত মাটি চাপা দিয়ে দিতো।
২. সন্তানদের লালন-পালন ও অর্থনৈতিক কষ্ট ও সমস্যায় পড়ার ভয়ে মানুষ শিশুদের হত্যা করতো।
৩. অবার চরম অজ্ঞতাবশত নিজেদের উপাস্যদের সন্তুষ্টির জন্য শিশু সন্তানদের বলি দেওয়া হতো। এসব বিষয়ে একাধিক আয়াতে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-
وَكَذَلِكَ زَيَّنَ لِكَثِيرٍ مِّنَ الْمُشْرِكِينَ قَتْلَ أَوْلاَدِهِمْ شُرَكَآؤُهُمْ لِيُرْدُوهُمْ وَلِيَلْبِسُواْ عَلَيْهِمْ دِينَهُمْ وَلَوْ شَاء اللّهُ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ
‘এমনিভাবে অনেক মুশরেকের দৃষ্টিতে তাদের উপাস্যরা সন্তান হত্যাকে সুশোভিত করে দিয়েছে যেন তারা তাদেরকে বিনষ্ট করে দেয় এবং তাদের ধর্মমতকে তাদের কাছে বিভ্রান্ত করে দেয়। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তারা এ কাজ করত না। অতএব, আপনি তাদেরকে এবং তাদের মনগড়া বুলিকে পরিত্যাগ করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৭)
قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ قَتَلُواْ أَوْلاَدَهُمْ سَفَهًا بِغَيْرِ عِلْمٍ وَحَرَّمُواْ مَا رَزَقَهُمُ اللّهُ افْتِرَاء عَلَى اللّهِ قَدْ ضَلُّواْ وَمَا كَانُواْ مُهْتَدِينَ
‘নিশ্চয়ই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা নিজ সন্তানদেরকে নির্বুদ্ধিতাবশত কোনো প্রমাণ ছাড়াই হত্যা করেছে এবং আল্লাহ তাদেরকে যেসব দিয়েছিলেন, সেগুলোকে আল্লাহর প্রতি ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে হারাম করে নিয়েছে। নিশ্চিতই তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং সুপথগামী হয়নি।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪০)
قُلْ تَعَالَوْاْ أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ أَلاَّ تُشْرِكُواْ بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَلاَ تَقْتُلُواْ أَوْلاَدَكُم مِّنْ إمْلاَقٍ نَّحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ وَلاَ تَقْرَبُواْ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلاَ تَقْتُلُواْ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
‘আপনি বলুন! এসো, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তা এই যে, আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে অংশিদার করো না, পিতা-মাতার সঙ্গে সদয় ব্যবহার করো, স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্র্যের কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ। (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৫১)
কন্যা শিশুর মর্যাদায় বিশ্বনবির ঘোষণা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য বিধান এবং মেয়েদের ওপর ছেলেদের অহেতুক প্রাধান্যদান কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন-
‘যার তত্ত্বাবধানে কোনো কন্যা শিশু থাকে আর সে তাকে জীবিত দাফন না করে, তার প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন না করে। আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (আবু দাউদ)
কন্যা শিশুর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব ও লালন পালনে যত্নবান হলেই রয়েছে জান্নাত প্রাপ্তির সুসংবাদ ও বিশেষ ঘোষণা। হাদিসে পাকে এসেছে-
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কন্যা সন্তানের পালনকারীর জন্য তিনটি পুরস্কার ঘোষণা করেছেন-
১. জাহান্নাম থেকে মুক্তি।
২. জান্নাতে প্রবেশের নিশ্চয়তা।
৩. জান্নাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন।
সুতরাং কন্যা সন্তানের প্রতি অবহেলা করলে পরিণতি কী হতে পারে কুরআনে এ আয়াত হাদিস থেকেই অনুমেয়। কন্যা শিশুরা বড় হলে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ ৩টি সম্মান ও মর্যাদার আসন অলংকৃত করবে। তাহলো-
> মায়ের মর্যাদা
কন্যা শিশু বড় হলে মা হবে। ইসলাম নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে, সমাজ-সংসারে তাদের সম্মানিত করেছে। ইসলাম সব সময় নারীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার নির্দেশনা দিয়েছে। কুরআনের নির্দেশ হলো-
‘তোমরা নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো।` (সুরা নিসা : আয়াত ১৯)
আবার নারীদের মায়ের মর্যাদা দিয়ে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَى وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ
‘আর আমি মানুষকে তার বাবা-মার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়াতে দু বছরে (সময়ের প্রয়োজন) হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে।’ (সুরা লোকমান : আয়াত ১৪)
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মায়ের মর্যাদা ও উত্তম আচর পাওয়ার বেশি হকদার কে? এ প্রশ্নে তিনি প্রথম তিন বার মায়ের কথা বলেছেন। চতুর্থবার বাবার কথা বলেছেন।
> স্ত্রীর মর্যাদা
কন্যা সন্তান নির্ধারিত বয়স সীমায় পৌঁছলে স্ত্রীর মর্যাদা লাভ করে। ইসলাম তাকে সুন্দর ও উত্তম এ মর্যাদায় সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। পুরুষদের প্রতি স্ত্রীর প্রতি সর্বোত্তম দায়িত্ব পালনে তাগিদ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ فَإِن كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
‘তোমারা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে ন্যায়সংগতভাবে জীবন-যাপন কর। এরপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ অনেক কল্যাণ রেখেছেন। (সুরা নিসা : আয়াত ১৯)
> বোনের মর্যাদা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কন্যা সন্তানকে লালন-পালন করা জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এবং বেহেশতে প্রবেশের কারণ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার তিনটি কন্যা অথবা তিনটি বোন আছে, তাদের সঙ্গে স্নেহপূর্ণ ব্যবহার করলে সে বেহেশতে প্রবেশ করবে।` (তিরমিজি)
বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী হোক দুনিয়াতে এমন কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে ব্যক্তি জাহান্নাম বা নরকে যেতে চায়। আবার জান্নাত বা স্বর্গে যেতে চায় না এমন লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সর্বোপরি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী এমন কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না যে ব্যক্তি জান্নাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী হতে চায় না।
কন্যা শিশুর প্রতি রাসুলের ভালোবাসা
কন্যা শিশুর মর্যাদা ও সম্মান প্রদানে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। শিশু ফাতিমাকে অনেক ভালোবাসতেন তিনি। তাইতো তিনি বলতেন-
‘শিশুদেরকে ভালোবাস, শিশুরা আল্লাহর পুষ্প। (তিরমিজি)
কন্যা সন্তানের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করলেই হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী তার জন্য জাহান্নাম হারাম। মিলবে সুনিশ্চিত জান্নাত। সর্বোচ্চ বোনাস হিসেবে থাকবে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে জান্নাতে বসবাসের সুযোগ।
কন্যা সন্তান লালন পালনের পুরস্কার
আল্লাহ তাআলা কাউকে এক বা একাধিক কন্যা সন্তান উপহার দিলে সন্তুষ্ট চিত্তে তাদের লালন-পালন করা আবশ্যক। তাদের প্রতি অবহেলা বা এ কারণে মনে কষ্ট নেওয়ার কোনো কারণ নেই। হাদিসে পাকে এ ব্যাপারেও সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এভাবে-
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুজন কন্যা সন্তানকে লালন-পালন ও দেখাশোনা করল (বিয়ের সময় হলে ভালো পাত্রের কাছে বিয়ে দিল) সে এবং আমি জান্নাতে এরূপ এক সঙ্গে প্রবেশ করব, যেরূপ এই দুটি আঙুল (এ কথা বলার সময় তিনি নিজের দুই আঙুল মিলিয়ে দেখালেন)।’ (তিরমিজি)
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তিকে কন্যাসন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সঙ্গে তা সম্পাদন করেছে, সেই কন্যাসন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড় (প্রতিবন্ধক) হবে।’ (তিরমিজি)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কন্যা সন্তানের লালন-পালনের বিষয়ে আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যাসন্তান বা তিনজন বোন আছে, আর সে তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করেছে, তাদের নিজের জন্য অসম্মানের কারণ মনে করে না, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি)
বর্তমান সময়ে ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে সব জায়গায় কন্যা সন্তান তথা নারীর প্রতি চরম বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। আবার স্বাধীনতার নামে কন্যা তথা নারীদের পণ্যের বিজ্ঞাপনের সর্বনিম্নস্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। কন্যা সন্তানসহ সব নারীদের প্রতি এমনটি মারাত্মক অপরাধ।
সুতরাং কন্যা সন্তানের প্রতি আমাদের করণীয় হলো, তাদের দ্বীন শিক্ষা দেয়া। তাদের অধিকারের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া। হাদিসের আলোকে তাদের প্রতিপালন করা। তাদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
মনে রাখতে হবে
কন্যা সন্তানের প্রতি বৈষম্য নয়, অনাদর অবহেলা নয়, তাদের সঙ্গে সর্বোত্তম সুন্দর আচরণ করা জরুরি। কন্যা বা নারীরা পণ্য নয় বরং ইসলাম কন্যা ও নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান। যার সর্বোচ্চ পুরস্কার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে জান্নাতে বসবাস।
কন্যা সন্তানের লালন-পালনকারী যদি মা-বাবা ছাড়া অন্য কেউও হয় তবে তাদের জন্য উল্লেখিত পুরস্কার সুনিশ্চিত। হাদিসে পাকে এ কারণেই মা-বাবার পরিবর্তে কন্যা সন্তান বা বোনের লালনকারী-পালনকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কন্যা সন্তান তথা নারীর প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করার তাওফিক দান করুন। কন্যা সন্তান তথা নারীদের অন্যায় বা গুনাহের পথে পরিচালিত করা থেকে বিরত রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর সর্বোত্তম শিক্ষার ব্যবস্থা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম