ইউরিন বা প্রস্রাবে ইনফেকশনের সমস্যায় নারী-পুরুষ ও ছোট-বড় সবাই ভোগেন। আবার অনেকেই প্রাথমিক অবস্থায় টের পান না এই সংক্রমণের বিষয়ে। ফলে এর প্রভাব মাত্রারিক্ত পড়ে শরীরে। দীর্ঘদিনের প্রস্রাব সংক্রমণে বাড়তে পারে লিভার ও কিডনির নানা রোগ।
Advertisement
সারাদিন যত পানি পান করা হয় সবই লিভার ও কিডনি ছেঁকে মূত্রনালি দিয়ে বের হয়ে যায়। সবার শরীরেই দু’টি কিডনি, দু’টি ইউরেটার, একটি ইউরিনারি ব্লাডার (মূত্রথলি) ও ইউরেথ্রা (মূত্রনালি) নিয়ে রেচনতন্ত্র গঠিত।
এই রেচনন্ত্রের যে কোনো অংশে যদি সংক্রমণ ঘটে তাহলে তাকে ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ বলা হয়। কিডনি, মূত্রনালি, মূত্রথলি বা একাধিক অংশে একইসঙ্গে এ ধরণের সংক্রমণ হতে পারে। এই সংক্রমণকেই সংক্ষেপে ‘ইউরিন ইনফেকশন’ বলা হয়।
সাধারণত সবারই এই সমস্যাটি হতে পারে। তবে নারীদের মধ্যে ইউরিন ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। জেনে নিন যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি ইউরিন ইনফেকশনে আক্রান্ত কি না-
Advertisement
>> প্রস্রাব গাঢ় হলুদ বা লালচে হওয়া>> প্রস্রাবে দুর্গন্ধ>> বারবার প্রস্রাবের বেগ অনুভব করা >> ঠিকমতো প্রস্রাব না হওয়া>> প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা অনুভব করা>> তলপেটে ও পিঠের নিচে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া>> শরীরে জ্বর জ্বর ভাব>> কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা ও>> বমি ভাব ও বমি হওয়া ইত্যাদি।
ইউরিন ইনফেকশনের ঘরোয়া প্রতিকার
ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন। পাশাপাশি কয়েকটি ঘরোয়া প্রতিকারও অনুসরণ করতে পারেন। জেনে নিন করণীয়-
>> দিনে অবশ্যই ২-৩ লিটার পানি খান। প্রসাবে হলুদ ভাব দেখলেই প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। সাধারণত প্রতি ৪-৫ ঘণ্টা পরপর প্রস্রাব হওয়া উচিত। এরও বেশি সময় ধরে প্রস্রাব না হলে বেশি করে পানি খান।
Advertisement
>> পর্যাপ্ত ভিটামিন সি খিতে হবে। চিকিত্সকরা এক্ষেত্রে রোগীদেরকে দৈনিক ৫০০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়ার পরামর্শ দেন। ভিটামিন সি মূত্রথলী ভালো রাখে ও প্রস্রাবের সময় জ্বালা ভাব কমায়। এছাড়াও ভিটামিন সি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
>> ইউরিন ইনফেকশন হলে বেশি পরিমাণে আনারস খাওয়া উচিত। এতে আছে ব্রোমেলাইন নামক একটি উপকারী অ্যানজাইম। গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরিন ইনফেকশনে আক্রান্ত রোগীদেরকে সাধারণত ব্রোমেলাইন সমৃদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। তাই ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রতিদিন এক কাপ আনারসের রস খান।
>> ইউরিন ইনফেকশনের কয়েকদিনের মধ্যেই সংক্রমণ কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করানো জরুরি।
>> বেকিং সোডা দ্রুত ইউরিন ইনফেকশন সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। এজন্য আধা চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস পানিতে ভালো করে মিশিয়ে দিনে একবার খেলেই প্রস্রাবের জ্বালা ও ব্যথা কমে যাবে।
সূত্র: জি নিউজ
জেএমএস/জেআইএম