হৃদিতা তাহ্সীন (২৫)। ভোলা পৌর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলমান পাড়ার বাসিন্দা। ভোলা সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স ইংরেজি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে তিনি অনলাইনে বিভিন্ন প্রসাধনী বিক্রি করে স্বাবলম্বী এক নারী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। প্রতি মাসে তার আয় প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। ব্যতিক্রমী এ নারী লাভের টাকা পরিবারে খরচ বা বিলাসিতার কাজে ব্যয় করেন না।
Advertisement
তিনি নিজের খরচের জন্য কিছু টাকা রেখে বাকি টাকা গরিব অসহায়দের সহযোহিতায় দেন। ব্যতিক্রমী এ নারীর গল্পটাও ব্যতিক্রম। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। বাবা মো. সরওয়ার একজন শিক্ষক এবং মা আকতার জাহান জোসনা হেলথ্ ইনসটাক্টর। পরিবারের কোনো অভাব নেই তার। তবুও তিনি নিজে কিছু করার জন্য নেমেছেন অনলাইন ব্যবসায়।
হৃদিতা তাহ্সীনের প্রসাধনী ক্রেতা রয়েছে সারাদেশে। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। সারাদেশের অনলাইন প্রসাধনী বিক্রেতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি।
হৃদিতা তাহ্সীন জাগো নিউজকে বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা করার ইচ্ছে ছিল তার। সেই ইচ্ছেকে বাস্তবায়নের জন্য তিনি ২০১৬ সালের দিকে অনলাইন ব্যবসা শুরু করেন। শুরুর দিকে তার পরিবার থেকে বাধা দেয়া হলেও পিছু হটেননি তিনি। নিজের কিছু জমানো টাকা দিয়ে শুরু হয় তার ব্যবসায় যাত্রা।
Advertisement
তার কিছু বন্ধুর মাধ্যমে চায়না, থাইল্যান্ড, কোরিয়া ও ভারত থেকে স্ক্রিন কেয়ার, মেকআপসহ নারীদের বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী আনেন তিনি। এরপর অনলাইন তার Shihri’s Choice নামে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অল্প লাভে পণ্যের বিজ্ঞাপন পোস্ট করেন। প্রসাধনীর মডেলিংও করেন তিনি নিজেই। পরে শুরু হয় সারাদেশ থেকে নারী ক্রেতাদের যোগাযোগ। ক্রেতাদের পছন্দমতো পণ্য কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠান তিনি।
ক্রেতারা কম দামে ভালো প্রসাধনী পেয়ে বারবার তার কাছ থেকে পণ্য কিনছেন। এভাবেই তিনি অল্প দিনে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এবং তার প্রসাধনী বিক্রি বেড়ে যায়। বর্তমানে পরিবার থেকে উৎসাহ ও কিছু পুঁজি পেয়ে বড় পরিসরে ব্যবসা করছেন তিনি।
করোনার কারণে ব্যবসার বেচা-বিক্রি ও লাভও কমেছে। করোনার আগে প্রতি মাসে প্রায় লাখ টাকার মতো বিক্রি হলেও করোনার সময় তা কমে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা হয়েছে। এ ছাড়া আগে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা লাভ হলেও বর্তমানে তা কমে হচ্ছে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, লাভের কিছু টাকা আমি নিজের খরচের জন্য রেখে বাকি টাকা গরিব ও অসহায়দের সহযোগিতার কাজে ব্যয় করি। ১ টাকার দানবাক্স নামক মানবিক সংগঠনের মাধ্যমে গরিব অসহায়দের খাদ্য সহযোগিতা, বস্ত্র বিরতণ ও অটোরিকশা বিতরণসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছি।
Advertisement
তার মতে, নারীরা পুরুষের পাশাপাশি অনলাইনে ব্যবসা করে সংসারের হাল ধরলে বাড়তি আয় করা সম্ভব। এতে বেশি পুঁজিও দরকার হয় না। সাহস নিয়ে এগিয়ে গেলেই সফল হওয়া সম্ভব।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এমএমএফ/এমকেএইচ