গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহে একটুখানি স্বস্তির পরশ নিয়ে আসে বর্ষাকাল। বর্ষা আসতেই বেড়ে যায় নানা ধরনের ঠান্ডাজনিত রোগ-বালাই। এ সময় আর্দ্র আবহাওয়া ও মশার প্রকোপে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা।
Advertisement
ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ ফ্লু বা ভাইরাসজনিত রোগগুলো তো আছেই; সেই সঙ্গে মাংসপেশি ও জয়েন্টে ব্যথা, কলেরা ও ডায়রিয়ার মতো রোগ ব্যাপক আকার ধারণ করে।
বেশিরভাগ শিশুই বর্ষায় ঠান্ডায় ভোগে। তাই ঘরোয়া উপায়ে এ সময় শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। জেনে নিন বর্ষায় শিশুর সুরক্ষায় করণীয়-
>> বর্ষায় শিশুদের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি। ভিটামিন ও মিনারেলযুক্ত বিভিন্ন ফলমূল ও শাকসবজি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যাতে পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন এ বি ও সি থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
Advertisement
>> এ সময় শিশুকে বাইরের খাবার খাওয়াবেন না। কলেরা ও টাইফয়েডের জীবাণু খোলা খাবারে থাকতে পারে। তাই শিশুকে টাটকা ও গরম খাবার খাওয়ান। খাবার ঢেকে রাখুন।
>> পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে শিশুকে পান কোতে হবে। ছোট শিশুর দুধ বানানোর সময় ফুটানো পানি ব্যবহার করতে হবে। পানিবাহিত রোগগুলো থেকে বাঁচতে বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে শিশুকে।
>> ঘর শুকনো ও পরিষ্কার রাখতে হবে সবসময়। শিশুর ঘর যেন স্যাঁতস্যাঁতে না থাকে। ঘরে যাতে নিয়মিত আলো বাতাস প্রবেশ করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
>> ঘরের চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে; যেন সেখানে মশার বসতি না হয়। বৃষ্টির সময় শিশুকে বাইরে বের হতে না দেওয়াই ভালো।
Advertisement
>> বর্ষায় তাপমাত্রা ঠান্ডা থাকায় শিশুদের গোসলে অনীহা দেখা যায়। তবে নিয়মিত গোসল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনের সবচেয়ে উষ্ণ সময়ে বাচ্চাদের গোসল করাতে হবে। গোসলের জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। গোসলের পানিতে কয়েক ফোঁটা স্যাভলন বা ডেটল এন্টিসেপটিক লিকুইড মিশিয়ে দিতে পারেন।
>> শিশুদের পা সবসময় শুকনো রাখতে হবে। বর্ষায় ঘরের ভেতর সবার স্লিপার ব্যবহার করা উচিত। মশা থেকে অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য শিশুর পুরো শরীর ঢেকে থাকেড়; এমন পোশাক পরানো উচিত।
>> এ সমঢ সুতির পোশাক পরাতে হবে শিশুকে। ঘুমানোর সময় শিশুকে মশারির মধ্যে রাখতে হবে। মশা নিরোধক স্প্রে বা ভালো মানের কয়েল ব্যবহার করতে হবে।
প্রতিরোধ ব্যবস্থাই শেষ কথা নয়। শিশুর ফ্লু সংক্রমণ সন্দেহ হলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে করোনা মহামারির এ সময় ঠান্ডাজনিত রোগ একেবারেই অবহেলা করবেন না।
উপরোক্ত পরামর্শগুলো শুধু শিশুদের জন্যই নয়; প্রাপ্তবয়স্করাও মেনে চলবেন। সুস্থ দেহ আমাদের মানসিক শক্তিকে অনেক বাড়িয়ে দেয়। তাই যে কোনো মৌসুমেই আবহাওয়া অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা উচিত।
জেএমএস/জেআইএম