কৃষি ও প্রকৃতি

হাওরে প্রথমবারের মত সূর্যমুখী চাষ

কিশোরগঞ্জের মাঠে মাঠে হলুদের গালিচা। শন শন বাতাসে দোল খায় দৃষ্টিনন্দন সূর্যমুখীর। চারপাশে হাসি ছড়িয়ে আকাশের দিকে মুখ তোলে নয়নাভিরাম সূর্যমুখীরা।

Advertisement

ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা মৌমাছি-ভ্রমরেরা। এ ফুল ও ফুলে উড়াউড়ি। ঘুরে ঘুরে হলুদ পরাগে মুখ রাঙিয়ে মধু আহরণ। কখনোবা সূর্যের দিকে হাত বাড়ায় সূর্যমুখী ফুল। সবুজ পাতার ফাঁক গলিয়ে এক চিলতে আলোর ঝিলিক।

এ যেনো আগুনরাঙা ফাগুনে প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়াতে শৈল্পিক প্রতিযোগিতা! তাইতো ফাগুনবেলা এমন চোখজুড়ানো ক্ষণ উপভোগ করতে সূর্যমুখীর মাঠে মাঠে সৌন্দর্য পিপাসুদের ভিড়। ফুলের সৌন্দর্য চোখ ভরে দেখছে অনেকে। কেউ বা সেলফোনবন্দিতে ব্যস্ত এমন সুন্দর মুহূর্ত।

কিশোরগঞ্জে সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ায় তেলজাত এ ফসলের দিকে ঝুুঁকছেন তারা। প্রথমবারের মতো এবার হাওরে চাষ হয়েছে সূর্যমুখী। উৎপাদর লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাওয়ার আশাবাদ কৃষি বিভাগের। এ দিকে বিভিন্ন এলাকায় সূর্যমূখি মাঠে ভিড় করছে সৌন্দর্য পিপাসুরা।

Advertisement

এবার প্রথমবারের মতো সরকারের প্রণোদনায় কিশোরগঞ্জে চাষ হয়েছে তেলজাতীয় ফসল সূর্যমুখী। আর শুরুতেই এর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এবার সূর্যমুখীর ফলনও ভালো হয়েছে। এতে খুশি কৃষক। কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

মিঠামইন উপজেলার কুনকুনির হাওরের কৃষক মো. গিয়াস উদ্দিন ৩ একর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। তিনি জানান, এবার সূর্যমুখীর ভালো ফলন হয়েছে। এতে তিনি ভালো লাভবান হবার আশা করছেন।

এ ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান জানান, কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ধেয়া থেকে শুরু করে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা করছে।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিন্নাটি ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. রবিউল করিম জানান, তার ব্লকে সূর্যমুখির হাসি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত পর্যটক। অনেকে ফুল ছিড়ে নিয়ে যায়। তবুও খুশি কৃষকরা।

Advertisement

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ছাইফুল আলম জানান, কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। আগামীতে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হবে উল্লেখ করে কৃষি বিভাগের এ শীর্ষ কর্মকর্তা জানালেন, এতে করে বিদেশ থেকে তেল আমদানি আস্তে আস্তে কমে আসবে।

ডিসেম্বরের শেষ দিকে সূর্যমুখীর আবাদ হয়। ফসল ঘরে উঠবে আর কয়েকদিন পরই। এবার জেলায় আড়াই হাজার একর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে।

নূর মোহাম্মদ/এমএমএফ/এএসএম