কুরআন আল্লাহ তাআলার কিতাব। কুরআনের বিধান ও বিষয়াবলীকে নিজেদের পক্ষে আল্লাহর কথা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্যও অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল ইয়াহুদিরা। এটি ছিল স্বয়ং মহান আল্লাহ তাআলাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করার ঘৃণ্য কৌশল। তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ কৌশল ও অপচেষ্টার বিষয়টি মহান আল্লাহ তাআলা নিজেই কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। যাতে ঈমানদার মুমিন মুসলমান এ বিষয়ে সতর্ক থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন-وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًا يَلْوُونَ أَلْسِنَتَهُم بِالْكِتَابِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ الْكِتَابِ وَمَا هُوَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِندِ اللّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِندِ اللّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ‘আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব (কুরআন) পাঠ করে, যাতে তোমরা (ঈমানদাররা) মনে কর যে, তার কিতাব (কুরআন) থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে (পড়ছে) তা আদৌ কিতাব (কুরআন) নয়। আর তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহর তরফ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহর প্রতিই মিথ্যারোপ করে।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৭৮)
Advertisement
আয়াতের সার সংক্ষেপইসলাম ও বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রেসালাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে কুরআন বিকৃত করে মহান আল্লাহর কথা বলে চালিয়ে দেয়ার ঘৃণ্য প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে পড়ে ইয়াহুদিরা। ইসলাম ও মুসলমানদের এ ক্ষতি থেকে হেফাজত করতে মহান আল্লাহ তাআলা তাদের কৌশল সুস্পষ্টভাবে কুরআনুল কারিমে তুলে ধরেন। যাতে কোনো মুমিন মুসলমান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
আয়াতে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়-‘তাদের মধ্যে অর্থাৎ কিতাবি ইয়াহুদিদের মধ্যে একদল লোক আছেই যেমন কাব ইবনে আশরাফ; যারা আল্লাহর কিতাবকে নিয়ে (তেলাওয়াতের সময়) জিহ্বা বাঁকায় অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গুণাবলীর বিবরণ ইত্যাদি সংবলিত আয়াতসমূহ ঘুরিয়ে পাঠ করতো। সেগুলো স্থানচ্যুত করে বিকৃত তেলাওয়াতের দিকে নিয়ে যায়। যাতে তোমরা (ঈমানদাররা) তা অর্থাৎ ওই বিকৃত তেলাওয়াতকে আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিল করা কিতাবের (কুরআনের) অংশ বলে মনে কর। অথচ তা কিতাব তথা কুরআনের অংশ নয়। আর তারা বলে, তা আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে এসেছে অথচ তা আল্লাহর কাছ থেকে আসেনি। তারা আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে অথচ তারা জানে যে তারাই মিথ্যাবাদী।’ (তাফসিরে জালালাইন)
আয়াত নাজিলের উদ্দেশ্যইয়াহুদিরা আল্লাহর আয়াতের শব্দের বিকৃত উচ্চরণ করে অর্থের পরিবর্তন ঘটাতো। নিজেদের ইচ্ছা মতো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অর্থ বের করতো। নিজেদের বিশ্বাসের পরিপন্থী বিষয়গুলো জিহ্বা ঘুরিয়ে ভিন্ন অর্থবোধক শব্দে পরিণত করার চেষ্টা করতো। আর তাদের বিকৃত পরিভাষাকে আল্লাহর কুরআন বলে ঘোষণা করতো। যা মূলত আল্লাহর কুরআন ছিল না। তাদের এ ঘৃণ্য বিষয়টি তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা ইসলামে নিরাপত্তা ও মুসলমানদের ঈমানের প্রতি হেফাজত থাকার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
Advertisement
মুসলিমদের জন্য সতর্কতাইয়াহুদিদের ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকা জরুরি। ষড়যন্ত্রে সিদ্ধহস্ত ইয়াহুদিরা মুসলমানদের ঈমান ধ্বংসে এখনও সমানভাবে সক্রিয়। ইয়াহুদিদের এ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র তাদেরকেই প্রকৃত মিথ্যাবাদীতে পরিণত করেছে। তারা মুসলমানদের ঈমান ধ্বংস করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা করতো। যা এখনও বিদ্যমান।
সুতরাং মুমিন মুসলমানকে ইয়াহুদিদের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এ সতর্কতা অবলম্বনের জন্যই মহান আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করে তাদের ষড়যন্ত্রে ধরণ তুলে ধরেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইয়াহুদিসের সব ঈমানবিধ্বংসী ষড়যন্ত্র থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ
Advertisement