আইসল্যান্ডের নাম শুনলেই সবার চোখে ভেসে ওঠে বরফ ও পানির মেলবন্ধন। প্রকৃতি যেন সবটুকু সৌন্দর্য ধরে রেখেছে আইসল্যান্ডে। পৃথিবীর শীতলতম দেশটিতে সব সময়ই পর্যটকদের আনাগোনা দেখা যায়। ইউরোপের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের দেশটির অপরূপ দৃশ্য বরাবরই পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
Advertisement
বিস্ময়কর স্থানটিই পৃথিবীর সর্বশেষ সীমানা। জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি, বিশাল হিমবাহ, জলপ্রপাত, উষ্ণ ঝরনা, রাতের আকাশে অরোরাসহ দৃষ্টিনন্দন অনেক কিছু দেখার সুযোগ পাবেন এখানে। স্বাস্থ্যকর দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে দেশটি। মানুষের গড় আয়ু ৮৩ বছর। সাড়ে ৩ লাখ মানুষের এ দেশে সরকার মোট জিডিপি’র ৯ শতাংশ জনগণের স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করে।
মানুষের গড় উচ্চতা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। অন্তত ২ মিটার ২০ সেন্টিমিটার গড় উচ্চতা আইসল্যান্ডের পুরুষদের। আইসল্যান্ডের আরও মজার তথ্যসহ জানতে পারবেন, কেন বিশ্বের সবচেয়ে সুখী এ দেশে ঘুরতে যাবেন?
>> হঠাৎ পিপাসা পেয়ে গেল, সঙ্গে পানির বোতলও নেই। চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই, পাশের নদী থেকে পানি খেয়ে নিন। অবাক হচ্ছেন? সত্যি বলতে, আইসল্যান্ডের বিভিন্ন নদী ও জলাশয়ের পানি মিনারেল ওয়াটারের মতোই ফ্রেশ। তাই আপনি চাইলে অনায়াসেই, নদীর পানি পান করতে পারবেন।
Advertisement
>> একটি মশাও না-কি নেই আইসল্যান্ডে। শুধু মশা কেন, পোকামাকড়ও নেই বললেই চলে।
>> আইসল্যান্ডে রয়েছে অনেকগুলো সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১৩০টির মতো আগ্নেয়গিরি রয়েছে সেখানে, যার মধ্যে ৩০টি এখনো সক্রিয়।
>> আইসল্যান্ডের সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, সেখানকার আকাশে মাঝরাতে সূর্য ওঠে। তবে ভাববেন না, সব সময়ই এ ঘটনা ঘটে। শুধু গ্রীষ্মকালেই সেখানকার প্রকৃতি এ অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখায়। তাই মাঝরাতের সূর্যের আলোয়ই ভলিবল খেলেন খেলোয়াড়রা।
>> সাপ, কচ্ছপ ও টিকটিকি পোষা দণ্ডনীয় অপরাধ আইসল্যান্ডে। ১৯০০ সালের গোড়ার দিকে সেখানে এমন একটি আইন করা হয়। জানা গেছে, টিকটিকি পোষা এক ব্যক্তি সংক্রমণের শিকার হয়ে মারা যান। এরপর থেকে সেখানে বিষাক্ত প্রাণি পোষা নিষেধ।
Advertisement
>> আইসল্যান্ডে রয়েছে ১২০০টি ফুটবল মাঠের সমান একটি বিশাল হিমবাহ। যেটি সবচেয়ে বড় হিমবাহ। নাম ভাতনাইয়োক্যুডল। আইসল্যান্ডে ঘুরতে গেলে পর্যটকরা অবশ্যই হিমবাহ ঘুরতে ভোলেন না। তবে অবশ্যই গাইড নিয়ে যেতে হবে। কারণ যেকোনো সময় বরফে ফাটল ধরে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
>> প্রকৃতির অপার বিস্ময়কর দেশটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে। এ দেশের মানুষ সত্যিই অনেক সুখী। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ফিনল্যান্ড, দ্বিতীয় ডেনমার্ক, তৃতীয় সুইজারল্যান্ড ও চতুর্থ আইসল্যান্ড।
>> বিরল উষ্ণপ্রস্রবণের দেখা মিলবে আইসল্যান্ডে। যাকে গিজার বলা হয়। এটি এক ধরনের প্রস্রবণ। যার বৈশিষ্ট্য হলো- এব় ভেতব় থেকে কিছু সময় পব়পব় পানি উচ্চ চাপে নির্গমণ হয়। যেখানে এটি গরম পাথরের সংস্পর্শে আসে। ফলে চাপযুক্ত পানি ফুটে ওঠে এবং উষ্ণপ্রস্রবণেব় পৃষ্ঠতল থেকে ছিটকে বের হয়। প্রায় ৩০ মিটার উঁচু পানি ওঠা-নামার এমন দৃশ্য আইসল্যান্ডে স্থায়ী কিছু নয়।
>> আইসল্যান্ডে ঘুরতে যাবেন অথচ হট স্প্রিং উপভোগ করবেন না, তা কি হয়? সেখানে ব্লু লাগুন নামে একটি জিওথার্মাল স্পা রয়েছে। সেখানকার পানিতে শরীর ভেজালে ত্বকের যাবতীয় ব্যাধি থেকে নিস্তার মেলে। এ কারণেই স্থানটিতে সব সময় পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে।
>> মেরুজ্যোতি বা সুমেরু প্রভা রাতে আইসল্যান্ডের আকাশে জ্বলজ্বল করে। রাতের আকাশে আলোর এ খেলা দেখা যায়, অক্টোবরের শুরু থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত। গ্রীষ্মের সময় আইসল্যান্ডে কখনো পুরোপুরি অন্ধকার নামে না। অন্যদিকে শীতকালে সেখানে আলোর দেখা পাওয়া দুষ্কর।
>> আইসল্যান্ডে গেলে যে বিষয়টি ভেবে অবাক হবেন, তা হলো- সেখানে কোনো রেলওয়ে সিস্টেম নেই। তার মানে রেলগাড়ির দেখা পাবেন না আইসল্যান্ডে।
>> প্রায় ১০০০ বছর আগে আইসল্যান্ডে গণতন্ত্র চালু হয়। বিশ্বের প্রথম গণতান্ত্রিক দেশ এটি। আইসল্যান্ডের সংসদ ৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা অনেক পুরোনো।
>> আইসল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি সুইমিং পুল রয়েছে। তাই সব জায়গায়ই আপনি চাইলে গা ভেজাতে পারবেন।
>> বিশ্বের মধ্যে আইসল্যান্ডই একমাত্র দেশ; যেখানে ১০০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। সেখানকার প্রায় ৭৩ শতাংশ জলবিদ্যুৎ এবং অবশিষ্টাংশটুকু ভূ-তাপীয় শক্তি থেকে আসে।
অ্যাডভেঞ্চার্স/জেএমএস/এসইউ/এমএস