ইসলামের প্রধান ইবাদত নামাজ। মুমিন মুসলমানের জন্য নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। শুধু তাই নয়, নিশ্চয় নির্দিষ্ট সময়ে মুসলমানদের উপর নামাজ আদায় করা ফরজ। নামাজ আদায়ের মধ্যেই রয়েছে মুমিনের সবচেয়ে উত্তম আমল।
Advertisement
যথাসময়ে নামাজ আদায় করাকে মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ও আমল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা নামাজের ব্যাপারে তাগিদ দিয়ে বলেন-
حَافِظُواْ عَلَى الصَّلَوَاتِ والصَّلاَةِ الْوُسْطَى وَقُومُواْ لِلّهِ قَانِتِينَ - فَإنْ خِفْتُمْ فَرِجَالاً أَوْ رُكْبَانًا فَإِذَا أَمِنتُمْ فَاذْكُرُواْ اللّهَ كَمَا عَلَّمَكُم مَّا لَمْ تَكُونُواْ تَعْلَمُونَ
'(সময় মতো) সব (ফরজ) নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও। অতপর যদি তোমাদের কারো ব্যাপারে ভয় থাকে, তাহলে পদচারণা অবস্থাতেই (নামাজ) পড়ে নাও অথবা সওয়ারীর উপরে। তারপর যখন তোমরা নিরাপত্তা পাবে, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর, যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে, যা তোমরা ইতিপূর্বে জানতে না।' (সুরা বাকারা : আয়াত ২৩৮-২৩৯)
Advertisement
উল্লেখিত আয়াতে যথা সময়ে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে মানুষ নামাজে দেরি করে। অবহেলায় সময় কাটিয়ে দেয়। অথচ কুরআনুল কারিমের নির্দেশনা হলো- সময় মতো নামাজ পড়া। এমনকি যদি কারো কোনো ভয় কিংবা কেউ সফরে সাওয়ারির উপরও থাকে তবে তাকে সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামাজ আদায়ের তাগিদ দেয়া হয়েছে। নামাজ পড়ার সময় একান্ত আদবের সঙ্গে আদায় করার কথাও বলা হয়েছে। কেননা নামাজ পড়া হয় মহান আল্লাহর জন্য।
নামাজ ফরজ ইবাদত। কিন্তু যথা সময়ে নামাজ আদায় করা মুমিন মুসলমানের জন্য সবচেয়ে উত্তম আমল। এ কথা ঘোষণা করেছেন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহ্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আল্লাহর কাছে কোন আমল সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেন, 'সময় মতো সালাত আদায় করা'। (আমি) বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, 'বাবা-মার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা। (আমি) বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, 'আল্লাহ্র পথে জিহাদ করা।' (বুখারি ও মুসলিম)
মনে রাখতে হবেইচ্ছাকৃতভাবে নামাজে অবহেলা করা বা দেরি করে নামাজ আদায় করা মারাত্মক ক্ষতি। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের সুরা মাউন-এ ঘোষণা করেন-فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ - الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ'অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য যারা তাদের নামাজ সম্বন্ধে বে-খবর।' (সুরা মাউন : আয়াত ৪-৫)
Advertisement
ফরজ ইবাদত নামাজ যথা সময়ে আদায়ে যেমন কুরআনের জোর দাবি এসেছে। তেমনি হাদিসে পাকে যথা সময়ে নামাজ আদায়কে মুমিনের সবচেয়ে উত্তম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবার ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করে কিংবা অবহেলা করে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে মারাত্মক ক্ষতির কথা ঘোষণা করেছেন মহান আল্লাহ। সুতরাং যথা সময়ে নামাজ আদায় করে কুরআন-সুন্নাহর উপর যথাযথ আমল করার মুমিন মুসলমানের ঈমানের একান্ত দাবি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাসময়ে নামাজ আদায় করে কুরআন-সুন্নাহ ঘোষিত উত্তম আমলে নিজেদের নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি কিংবা অবহেলা করে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর