মনের ভুলে কিংবা শয়তানের প্ররোচনায় অনেকেই অন্যায় করে। অন্যের প্রতি জুলুম করে। এসব ক্ষেত্রে জুলুমকারী ব্যক্তির করণীয় কি হবে? সে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা আলাইহিস সালামের একটি ঘটনা ও ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া কুরআনে পাকে তুলে ধরেছেন।
Advertisement
মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর কাছে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং কোনো অন্যায়কারীকে সহযোগিতা না করার প্রতিজ্ঞা করেন-رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَغَفَرَ لَهُ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ - رَبِّ بِمَا أَنْعَمْتَ عَلَيَّ فَلَنْ أَكُونَ ظَهِيرًا لِّلْمُجْرِمِينَউচ্চারণ : রাব্বি ইন্নি জালামতু নাফসি ফাগফিরলি ফাগাফারা লাহু ইন্নাহু হুয়াল গাফুরুর রাহিমু। রাব্বি বিমা আনআমতা আলাইয়্যা ফালান আকুনা জ্বাহিরাল লিল-মুঝরিমিন।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬-১৭)
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম হাতের আঘাতে (ঘুষিতে) এক ব্যক্তিকে মেরে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে মুসা আলাইহিস সালাম বুঝতে পারেন এটি শয়তানের কাণ্ড। তখনই তিনি একথাটি বলেন এবং মনের ইচ্ছার বিপরীতে এ কাজের জন্য তিনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে মুসা আলাইহিস সালামের সে ঘটনা ও ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি মুমিন মুসলমানের শিক্ষা গ্রহণের জন্য সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, যাতে মুমিন মুসলমানও এভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন।
Advertisement
কুরআনে উল্লেখিত ঘটনা ও দোয়াটি হলো-আল্লাহ তাআলা বলেন-- ‘যখন মুসা যৌবনে পদার্পণ করলেন এবং পরিণত বয়স্ক হয়ে গেলেন, তখন আমি তাঁকে প্রজ্ঞা ও জ্ঞানদান করলাম। এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ১৪)
- ‘তিনি শহরে প্রবেশ করলেন, যখন তার অধিবাসীরা ছিল বেখবর। তথায় তিনি দুই ব্যক্তিকে লড়াইরত দেখলেন। এদের একজন ছিল তাঁর নিজ দলের এবং অন্যজন তাঁর শত্রু দলের। অতপর যে তাঁর নিজ দলের (ছিল) সে তাঁর শত্রু দলের লোকটির বিরুদ্ধে তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করল। তখন মুসা (আলাইহিস সালাম) তাকে ঘুষি মারলেন এবং এতেই তার মৃত্যু হলো। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, এটা শয়তানের কাজ। নিশ্চয় সে প্রকাশ্য শত্রু, বিভ্রান্তকারী।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৫)
অতপর হজরত মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর কাছে আবেদন করলেন এবং বললেন-'হে আমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের ওপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬)
মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর কাছে কারো প্ররোচনায় আর কখনো কোনো অপরাধীকে সাহায্য করবেন না বলেও ঘোষণা করলেন এভাবে-- তিনি বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন, এরপর আমি কখনও অপরাধীদের সাহায্যকারী হবো না।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৭)
Advertisement
কুরআনুল কারিমের এ ঘটনা থেকেই আমরা জানতে পারি কোনো ব্যক্তি ভুলে বা শয়তানের প্ররোচনায় কারও প্রতি জুলুম করলে তার জন্য জরুরি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং আর কোনো অপরাধীকে সাহায্য না করার প্রতিজ্ঞা করা।
কুরআনের ভাষায় নাজিলকৃত সে দোয়াটি হলো-رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَغَفَرَ لَهُ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ - رَبِّ بِمَا أَنْعَمْتَ عَلَيَّ فَلَنْ أَكُونَ ظَهِيرًا لِّلْمُجْرِمِينَউচ্চারণ : রাব্বি ইন্নি জালামতু নাফসি ফাগফিরলি ফাগাফারা লাহু ইন্নাহু হুয়াল গাফুরুর রাহিমু। রাব্বি বিমা আনআমতা আলাইয়্যা ফালান আকুনা জ্বাহিরাল লিল-মুঝরিমিন।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬-১৭)অর্থ : 'হে আমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু। হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন, এরপর আমি কখনও অপরাধীদের সাহায্যকারী হবো না।'
মুসলিম উম্মাহর উচিত, মনের অজান্তে কিংবা মনের ভুলে কারও প্রতি জুলুম বা অত্যাচার করে ফেললে সঙ্গে আল্লাহর কাছে এ দোয়া করা এবং পুনরায় কোনো অপরাধী সাহায্যকারী হওয়া থেকে বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে সব সময় এসব ভুল থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। কোনো অপরাধীকে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস