পথহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। কিভাবে মানুষকে দ্বীন শিক্ষা দিতে হবে তাও শিখিয়েছেন। শিক্ষারধরণ কেমন হবে। আদব শিষ্টাচার কেমন হবে। এ হাদিসটি তারই উজ্জল দৃষ্টান্ত। তাছাড়া এ হাদিসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদিস। যা হাদিসে জিবরিল নামে পরিচিত। এতে ইসলাম, ঈমান, ইহসান ও কিআমাতের লক্ষণসমূহ আলোচনা হয়েছে। জাগো নিউজে তা তুলে ধরা হলো-হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট বসেছিলাম, এমন সময় এক ব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হয়, যার কাপড় ছিল ধবধবে সাদা, চুল ছিল কুচকুটে কালো; তার মাঝে ভ্রমণের কোনো চিহ্নও নেই। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনতে পারে নি। সে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে গিয়ে বসে, নিজের হাঁটু তার হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তার উরুর ওপর রেখে বললেন-‘হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন-রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘ইসলাম হচ্ছে- তুমি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল, সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত আদায় করা, রমজানে রোজা পালন করা এবং সামর্থ্যবান হলে (বাইতুল্লায়) হজ্জ করা।’ অতপর লোকটি বললেন, “আপনি ঠিক বলেছেন”। বিষয়টি আমাদেরকে আশ্চার্যান্বিত করল এ জন্য যে, সে নিজেই জিজ্ঞাসা করেছে আবার নিজেই উত্তরের সত্যয়ন করেছে।এরপর আগন্তুক বলল, তাহলে আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন-রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তা হচ্ছে এই যে, আল্লাহ্, তাঁর ফিরিশ্তাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ ও আখেরাতর ওপর ঈমান আনা এবং তাকদিরের ভাল-মন্দের ওপর ঈমান আনা।” আগন্তুক বলল, ‘আপনি ঠিক বলেছেন।’তারপর আগন্তুক বলল, আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন-রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তা হচ্ছে এই- তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ, আর তুমি যদি তাঁকে দেখতে নাও পাও তবে তিনি তোমাকে দেখছেন।’অতপর আগন্তুক বলল, আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে বলুন-রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী কিছু জানে না।’ আগন্তুক বলল, আচ্ছা, তার আলামত সম্পর্কে বলুন”। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তা হচ্ছে এই- ‘দাসী নিজের মালিককে জন্ম দেবে, সম্পদ ও বস্ত্রহীন রাখালগণ উঁচু উঁচু প্রাসাদ তৈরিতে প্রতিযোগিতা করবে।’তারপর আগন্তুক ব্যক্তি চলে যায়, আর আমরা আরো কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন, “হে ওমর, প্রশ্নকারী কে ছিলেন, তুমি কি জান? আমি বললাম, ‘আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল অধিক ভাল জানেন।’ তিনি বললেন, ‘তিনি হলেন জিবরিল। যিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন।’ (মুসলিম, মিশকাত)জাগো ইসলামে লেখা পাঠাতে ই-মেইল : jagoislam247@gmail.comজাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।এমএমএস/পিআর
Advertisement