সাহিত্য

মাসুম আহাদের মেঘকাব্য-২০

যদি বেঁচে যাই

Advertisement

এই জন্মে বেঁচে গেলে...জমাবো আড্ডা প্রিয় ক্যাম্পাসের সিঁড়ি ঘরেহাসানের টুং টাং অ্যাকোয়িস্টিক গিটারে;ওয়ারফেজের মিহি স্বরে(চুপচাপ চারদিক মাতাল হাওয়ায়)বাবুর হাইভোকালে ‘নিঃস্ব করেছ আমায়’!কোয়ান্টাম জাহিদের কণ্ঠে ফসিলের গান।

এবারের মতো বেঁচে গেলে...শাহবাগের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে,‘লালনের টি স্টলে’ চুটিয়ে সংলাপ হবে-রাষ্ট্র-বিরাষ্ট, সমাজ, সংস্কৃতিচাকরি, প্রেম-পলিটিক্স, অর্থনীতি বিষয়ক।আশা রাখছি- পল্টি এমরান, মিয়াজী, সুমন, সুমিত, চৌধুরী আজিম, মামুন, গিট্টু, আলম, সৌরভ বড়ুয়া,কবীর-সেলিম ভাই, হীরা আপু, আনন্দ চ্যাটার্জী,কবি মিঠা মামুন প্রমুখরা সভার মুখ উজ্জ্বল করবে।

সত্যিই যদি বেঁচে যাই,নাসিমের পেন্সিল স্কেচে নিজের প্রতিবিম্ব খুঁজবোসদা হাস্যোজ্জ্বল তারেকের গল্পের রসমালাইয়েররস সত্যি সত্যিই আস্বাদন করবো।

Advertisement

শিকারী ত্রিদীপ রয়ের শিকারে অর্জুনের ভাগশুধে নিবো, তোদের শিকারে আমায় একটু রাখআসফাক আকবর, ক্যাপাচিনো হবে গ্লোরিয়া জিনসেব্যবসায়ী হিসাব করে নিবো সামছুল আলম বেপারী।

যদি বেঁচে যাই,চারুকলার সামনে কালোকায় বাঁশিওয়ালার সুরেঘণ্টার পর ঘণ্টা অলসতা বিলাস করবো।থাকবে ধোয়াময় চা, ঠোঁটের ফাঁকে- উড়ন্তকুণ্ডলি পাকানো নিকোটিনের নির্যাসময় দুঃখবিলাস।

এ মহামারীর কালে বেঁচে গেলেদাদুর মতন শীতল পাটি পেতেবাড়ির পুরোনা আম গাছতলায়উদযাপন করবো নিশি।সাথে চিংড়ি-মিষ্টি কুমড়া ফুলের বড়া,ডাল পিঁয়াজু, অ্যালকোহল কড়া,সাথে চলবে ভূত, প্রেত, রাজ, রানি আর মৃত্যুপুরীর গল্প।

এই জন্মে বেঁচে গেলেআমার গ্রামের বিলেসাকরাইনে ঘুড়ি খেলায় মাতবো,কাজিনদের বহরে চড়ুইভাতি, গুলতি দিয়ে পাখি শিকার, মাছধরা, প্রজাপতি হয়ে ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াবো।

Advertisement

এই জন্মে বেঁচে গেলে সং সাজবোবৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায়মুড়ি-মুড়কি, গুড়ের জিলাপিবাতাস, কদমা, দই-চিড়া খাবো দাসকান্দির মেলায়।

এই যাত্রায় বেঁচে থাকলেমেঘনা নদীর কূলে জোছনা বিলাসেবরাবরের মত নেমন্তন্ন করবো-সোহেল, হেলালকে...যদিও তারা ঘরকুনো ঘুমকাতুরে।না এলেও তুহিনের সাথে শৈশব স্বপ্নজাল বুনবো,সাথে শান্তু, ফোক গায়ক ইমান আলি...

এই যাত্রায় বেঁচে থাকলেশান্ত নদীর মাঝ বুকে নৌকা ছেড়ে স্রোতের সাথেপথ চলবো... (মাঝি বাইয়া যাও রে)

বেঁচে থাকলে বারবার ছুটে যাব সমুদ্রেকান পাতলেই গর্জন দিয়ে ডাকেআয় ফিরে আয়।সাজেক ভ্যালি, নাফাখুম, জাফলং ঠাঁয় অপেক্ষায়কখন তার স্নিগ্ধতায় বিমুগ্ধ হবো।শুধু বেঁচে গেলেই হয়।

বেঁচে থাকলে ক্ষেতের আঁকাবাঁকা আইল ধরে তপ্ত দুপুরে কৃষাণীর হাতের রান্না কাচা মরিচে পাটশাক,আলু, কাচা আমের পাতুরি, মলাই মাছের চরচরিবাওড় ঘরে বইস্যা খামু।

বাঁইচা, থাকলে এইবারকবিতা লিখমু, মিছিল করুম, প্রতিবাদ করুমআন্দোলন করুম।দিক নির্দেশনায় থাকবে বীর সিপাহশালা আজিজ ভাই, কমান্ডিংয়ে থাকবেন বরাবরের মত ক্যাপটেন কাউসার ভাই...

বাঁইচা গেলে এবার,আমার ওনার হাতে আইড় মাছের কাবাব,জালি কাবাব, পোলাও, চিকেন রোল, কালো ভুনাজর্দা ভাত, বেশ জম্পেশ করে খামু।

বাঁইচা গেলে মিষ্টি বউটারেএইবার একটা ফুটফুটে‘আসমানি পুতুল’ আইনা দিমু...সাথে দোলনা, কলসী ফুল, ঝুনঝুনি।

করোনাকাল হতে বাঁইচা গেলেদাদা-দাদির কবরটা একটু স্পর্শ করে দেখবোএতটা শীতল হয়ে কী করে অপেক্ষা করছে? পুনরুজ্জীবনের...

এসইউ/এমকেএইচ