আইন-আদালত

কী নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ, প্রশ্ন হাইকোর্টের

কুমিল্লায় আদালতের এজলাসে বিচারকের সামনেই ছুরিকাঘাতে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় নিশ্চিতভাবেই পুলিশের গাফিলতি রয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

আদালত প্রশ্ন তুলে বলেছেন, আদালতে কী নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ। জজ সাহেবদের নিরাপত্তা কোথায়? বিচারক, আইনজীবী ও আদালতের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।

এ ঘটনায় এক রিট আবেদনের শুনানিতে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব কথা বলেন। এরপর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ জুলাই ধার্য করেন আদালত।

দেশের সব আদালত অঙ্গন ও বিচারকদের যথাযথ নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে গতকাল হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এক বিচারকের স্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ রিট দায়ের করেন।

Advertisement

গত ১৫ জুলাই কুমিল্লায় আদালতের এজলাসে বিচারকের সামনেই ছুরিকাঘাত করে ফারুক ( ২৮) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌসের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. ফারুক কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার অহিদ উল্লাহর ছেলে এবং ঘাতক হাসান জেলার লাকসাম উপজেলার ভোজপুর গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সোমবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতে জেলার মনোহরগঞ্জ থানার একটি হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছিল। এ সময় ওই হত্যা মামলার আসামি হাসান হঠাৎ করে তার সহযোগী আসামি ফারুককে ছুরিকাঘাত করেন। এতে ফারুক নিরুপায় হয়ে দৌড়ে বিচারকের খাস কামরায় গিয়ে আশ্রয় নেন। এ সময় হাসান দৌড়ে ওই কামরায় গিয়ে ফারুককে আবারও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে সে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক আদালতের পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা হাসানকে ধরে ফেলেন।

আদালতের পুলিশ পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি জানান, ঘাতক হাসানকে আটকসহ তার কাছ থেকে একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। গুরুতর আহত ফারুককে প্রথমে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে ও পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ফারুক ও ঘাতক হাসান একই মামলার আসামি বলে তিনি জানান।

Advertisement

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে আদালতে ছুটে যান কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এতোটা নিরাপত্তার মাঝেও আসামি ছুরি নিয়ে কীভাবে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং দায়িত্বরত পুলিশের অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এফএইচ/জেডএ/এমকেএইচ