‘বাংলাদেশ দ্রুত ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। সহিংসতা উসকে দেয় এমন ডিজিটাল মিথ্যা প্রচারণা ঠেকাতে এবং নাগরিক তথ্য ও গোপনীয়তার সুরক্ষায় গত বছর সংসদে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাস হয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে এ ধরনের আইন চালু আছে।’
Advertisement
মঙ্গলবার মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ এই আইনকে ভুলভাবে তুলে ধরেছে এবং এটি ব্যবহার করে সরকার সাংবাদিকদের অধিকার ও বাক-স্বাধীনতা দমন করছে বলে অভিযোগ করেছে।
‘এটা সত্য নয়। বাংলাদেশে অনেক মুক্ত গণমাধ্যম আছে। দেশে ৯টি জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র ও তিন শতাধিক স্থানীয় সংবাদপত্র রয়েছে; যারা বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছে, অনেক দৈনিক সরকারের তীব্র সমালোচনাও করছে।’
Advertisement
সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করে, কিন্তু এর বিপরীতে প্রায় ৩০টি বেসরকারি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক রয়েছে, তারা যেভাবে দেখে সেভাবেই সংবাদ পরিবেশন করে। প্রতিনিয়ত তারা সরকার, রাজনীতিবিদ ও সরকারের নীতিমালার সমালোচনা করছে। একই ধরনের বৈচিত্র্যতা দেখা যায়, দেশের আরও ২২০টির বেশি অনলাইন সংবাদমাধ্যমেও। এসব গণমাধ্যম দমনের পরিবর্তে সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে; যাতে সংখ্যালঘুদেরও কণ্ঠ শোনা যায় এবং সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে সব বাংলাদেশির সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। তবে ডিজিটাল মিডিয়া ও এ সম্পর্কিত প্রযুক্তির উন্নয়ন অব্যাহত থাকায় এই আইনেরও পরিমার্জন হবে। অন্যান্য নতুন আইনের মতো ডিজিটাল সিকিউরিট অ্যাক্টও নিখুঁত নয়।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, স্বাধীনতারও চ্যালেঞ্জ রয়েছে; গণতন্ত্র জটিল বিষয়। বাংলাদেশে স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র দুটিই রয়েছে। নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই দুটি বিষয়ের সুরক্ষাও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের উদ্দেশ্য। এ দুটি বিষয়ের সংমিশ্রণ সরল কিংবা ভারসাম্য তৈরি করা সহজ নয়।
এই আইনের সর্বোত্তম প্রয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এতে ক্রমবর্ধমান কিছু সমস্যাও আছে। অনেক সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, এ আইনের আওতায় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এ আইনে আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত না হওয়ার পর প্রতিবাদকারীরা অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের খসড়া অনুযায়ী এই আইনের ব্যাপারে সংসদে, গণমাধ্যম ও আইনি সংস্থাগুলোর মাঝে বিতর্ক হয়েছে। সাংবাদিক, সম্পাদক এমনকি এডিটরস গিল্ডও এই আইন নিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন; যা চূড়ান্ত আইন তৈরিতে সহায়তা করেছে।
Advertisement
এসআইএস/এমকেএইচ