অর্থনীতি

ভ্যাট আইন নিয়ে অন্ধকারে ব্যবসায়ীরা

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন ভ্যাট আইন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আগামী ১ জুলাই থেকে এ আইন বাস্তবায়ন করা হবে। তবে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে কোন পণ্যে কী পরিমাণ ভ্যাট কাটা হবে, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট হতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

রোজায় পণ্য সহনীয় পর্যায়ে থাকায় মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ব্যবসায়ীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীরা এ বিষয়গুলো পরিষ্কার করার আহ্বান জানান। যাতে নতুন আইনে ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয় গুরুত্ব দেয়ারও আহ্বান জানান ব্যবসায়ী নেতারা।

অনুষ্ঠানে বর্তমানে পণ্যমূল্য পরিস্থিতি-সংক্রান্ত পর্যালোচনাও করা হয়। এ সময় বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, ডিসিসিআই সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. আবুল হাশেম বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে কী পরিমাণ ভ্যাট বাড়বে, সেটা আমরা জানি না। আমরা জানতে চাই এটা যৌক্তিক হবে না অযৌক্তিক হবে। প্রত্যাশা একটাই, আমরা যৌক্তিক দামে পণ্য সরবরাহ করতে চাই। আমরা যারা পাইকারি ব্যবসা করি তারা অত্যন্ত সীমিত লাভে পণ্য বিক্রি করি। তাই ভ্যাটটা যেন যৌক্তিক হয়।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চিনিতে অনেক ট্যাক্স দিতে হয়। এর ওপর আগামী বাজেটে আরও ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। এটা প্রত্যাহার কারারও আহ্বান জানান তিনি।

সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, এতদিন আমরা টেনশন ফ্রি ব্যবসা করছিলাম। এখন ট্যাক্স বাড়ছে। কোনো সমস্যা নেই। সরকার চালাতে গেলে রাজস্ব বাড়াতে হবে। আমরা ট্যাক্স দিতে রাজি।

তিনি আরও বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে সরকারের প্রতি তিনি বলেন, তিন জায়গারটা এক জায়গায় করে ভ্যাট-ট্যাক্স নিলে ভালো হয়। প্রয়োজনে একটু বেশি ট্যাক্স নেয়া হোক। তবে চক্রবৃদ্ধি হারে ভ্যাট-ট্যাক্স যেন না বাড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে।

এ ব্যবসায়ী বলেন, চিনিতে ৭ টাকা ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। আজকে বিশ্ববাজারে চিনির দাম তলানিতে। সেটা হচ্ছে প্রতি টন ৩২২ ডলার। কিন্তু আমরা এক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স দিচ্ছি ৩৫০ ডলারের ওপর। যখন বিশ্ববাজারে চিনির মূল্য ৪৫০ ডলার হয়ে যাবে, তখন ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হবে ৪৫০ ডলার। তাই যে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে এটা আর ৭ টাকা থাকবে না। এটা হয়ে যাবে ১৮ টাকা।

Advertisement

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ছোট ছোট দোকানদারকে জরিমানা করা হয়। তাদের কী দোষ? তারা তো আমদানিকারক কিংবা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করে। সুতরাং এ পণ্যের মান গোড়াতেই যাচাই করার পরামর্শ দেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, জাতীয় বাজেটের ভ্যাটসহ বেশকিছু বিষয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যুক্ত। বিষয়টি নিয়ে আমি আলাপ করব। কতগুলো পণ্য আছে যেগুলো আমাদের হাতে নেই, সেগুলো বাই রোটেশন ই্ন্টারন্যাশনাল মার্কেটের সঙ্গে যুক্ত। তারপরও আপনারা চেষ্টা করবেন যাতে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে। মানুষের যেন কষ্ট না হয়।

এমইউএইচ/এমএসএইচ/এমএস