বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা রাজনীতি করছি, কিন্তু গণমানুষের যে প্রত্যাশা, সেটা তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছি।
Advertisement
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল এ সভার আয়োজন করে।
জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল সত্যিকার অর্থে তাঁতীদের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই নেতা বলেন, ‘আমরা যাদের প্রতিনিধিত্ব করে রাজনীতি করছি, তাদের যদি মাথায় না রাখি, অনেকে আমাদের দোষারোপ করে আমরা খালি নির্বাচন চাই, এটা চাই, সেটা চাই কিন্তু গণমানুষের যে প্রত্যাশা সেটা তুলে ধরতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। এটা তো শিকার করতে হবে। আমরা যদি নিজেদের আত্মসমালোচনা না করি, তাহলে কিন্তু এদের সমাধান দেয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘শুধু তাঁতী দল নয় এই যে কৃষক দল, কৃষক দলের একটা দায়িত্ব আছে। আজকে কৃষকের যে দুরবস্থা, এটা কৃষক দলের প্রধান দায়িত্ব যে, তারা এগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা এবং যাদের প্রতিনিধিত্ব করছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করা।’
Advertisement
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের জন্য সরকারের সমালোচনা করে খসরু বলেন, বাজেট দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবে না। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। তারা একদিকে লুট করছে, অন্যদিকে বাজেট দিচ্ছে, দেশ পরিচালনা করছে, পলিসি নির্ধারণ করছে। আজকে সব একীভূত। সত্যিকার অর্থে যারা ভোট চুরি করে তাদের হাতে দেশের সম্পদ নিরাপদ নয়। তাদের দ্বারা সম্পদের সুষম বণ্টন হতে পারে না।
দলের সাংগঠনিক বিষয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, সাংগঠনিক সবকিছু প্রোটোকল মেনে কাজ করার পরিবেশ দেশে নেই। সব অঙ্গ সংগঠনকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। এটার প্রয়োজনীয়তা আছে। তা না হলে অন্যরা কাজ করবে না। বাজেটে দেশের তাঁতী সম্প্রদায়ের জন্য কি দেয়া হয়েছে সে নিয়েও তাঁতী দলকে কাজ করতে হবে। তবেই আপনারা বিএনপির হয়ে তাঁত শিল্পে কর্মরত লোকজনের কাছে সমাদৃত হবেন। সব অঙ্গ সংগঠনের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে নিজ নিজ খাতের বিভিন্ন বিষয়ে সোচ্চার হওয়া। কেননা তাঁতীদের চাহিদা কখনোই পূরণ করা সম্ভব হয়নি। সারাবিশ্বে হাতে বোনা তাঁত পণ্যের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু আমরা বাংলাদেশে তার মূল্যায়ন করতে পারিনি। এ শিল্পের বিকাশ ঘটাতে ও বাজার ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তাঁত শিল্প বাঁচানোর বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, আজকে দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। তার মুক্তির সঙ্গে সবকিছু জড়িত। তার মুক্তির সঙ্গে জড়িত মানুষ ভোটাধিকার ও নিরাপত্তা ফিরে পাবে কি না। ন্যায়বিচার পাবে কি না। আমাদের এক দাবি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে দুপা এগিয়ে চিৎকার করতে হবে। সেটা হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।
খসরু বলেন, দেশের একটি গোষ্ঠী জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করে একদলীয় স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আজকে তিউনিশিয়ার উপকূলে জলে বাংলাদেশের তরুণ যুবকেরা ভাসছে। কেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালিয়েছে? যারা উন্নয়নের কথা বলেন, তারা কেউ কি জবাব দিতে পারবেন?
Advertisement
খসরু বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র থাকবে না, বাকস্বাধীনতা থাকবে না, সেখানে ন্যায়বিচার হতে পারে না। আমাদের আন্দোলনে নেমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেযাররম্যান আব্দুল মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, বিএনপির তাঁতীবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি হুমারুন ইসলাম খান প্রমুখ।
কেএইচ/জেডএ/এমএস