তখন বিটিভির যুগ। চ্যানেলটি বাঙালিকে বেঁধে রেখেছিলো পারিবারিক সংস্কৃতির দারুণ এক আবেগে, আয়োজনে। ঘটা করে বিটিভি দেখা একটা পারিবারিক উৎসবের মতো ছিলো তখন। সবাই খোঁজ খবর রাখতেন কখন কবে প্রিয় কোন অনুষ্ঠান-নাটক প্রচার হবে।
Advertisement
সেই সময়টাতে প্রচার হওয়া বিজ্ঞাপনগুলোও ছিলো নান্দনিক। যার ফলে খুব দ্রুতই সেগুলো দর্শকপ্রিয়তা পেতো। সেইসব বিজ্ঞাপনের বদৌলতে অনেক মডেল ও অভিনয়শিল্পীরাই তারকাখ্যাতি পেয়েছেন।
তাদের মধ্যে অন্যতম মনির খান শিমুল ও লামিয়া তাবাসসুম চৈতী। দর্শকের কাছে তারা শিমুল ও চৈতী নামেই পরিচিত। নব্বই দশকে একটি রঙের বিজ্ঞাপন এই দুজনকে দারুণ জনপ্রিয় জুটি করে তুলেছিলো বিটিভির দর্শকদের কাছে। অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে হাজির হয়েই নতুন এক দাম্পত্যের ভালোবাসার রঙ ছড়াতেন তারা।
তাদের মুখে ‘শোবার ঘরটা নীল হোক’, ‘আকাশের মতো’ সংলাপটি ছিলো খুবই জনপ্রিয়।
Advertisement
বিটিভির আর অনুষ্ঠানের মতো এই বিজ্ঞাপনটিও বিভিন্ন প্রজন্মের দর্শকের কাছে সোনালী স্মৃতির রুপালি পাখি। নব্বই দশকে প্রচার হওয়া ‘ভালবাসার রঙ’ স্লোগান নিয়ে সেই বিজ্ঞাপনের দুই মডেল শিমুল ও চৈতী দর্শকের মনে স্মৃতির আয়নায় প্রিয়মুখ হয়ে আছেন।
২৫ বছর পর আবারও ফিরে এলেন তারা। জুটি হয়ে। দম্পতি হয়ে। নববধুর কাজলের রঙ সেই আগের মতোই কালো। বার্জার সম্প্রতি তৈরি করেছে সেই বিজ্ঞাপনের সিক্যুয়েল। সেখানে দেখা গেল সেই দম্পতির ২৫ বছর দাম্পত্য জীবনের পূর্তির আয়োজন। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে অনেক কিছু।
পরিবারে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু মুখ, জন্ম নিয়েছে নতুন কিছু আনন্দমুখর মুহূর্ত। এখানে এই দম্পতির মেয়ের চরিত্রে দেখা গেল মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ খ্যাত ঐশীকে।
তবে দাম্পত্যের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মনের মাধুরী মেশানো রঙে রঙিন হয়েছিলো যে সংসার সেই সংসারের বসার ঘরটা আবারও গোলাপি আর শোবার ঘরটা আকাশের মতো নীল হয়ে উঠলো।
Advertisement
আদনান আল রাজীবের পরিচালনায় বিজ্ঞাপনটি প্রচারে আসার পর দারুণ সাড়া পড়েছে। ফেসবুকে এই টিভিসি নিয়ে চলছে স্মৃতির রোমন্থন। বিজ্ঞাপনটির নিচে হাজার হাজার দর্শক মন্তব্য করছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ফিরে গেছেন নব্বই দশকে ফেলে আসা অতীতে। দেশে বিদেশে থাকা আত্মীয়-বন্ধুদের ট্যাগ দিয়ে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে উঠছেন বিটিভির দিনগুলোর স্মরণে।
সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছেন শিমুল ও চৈতীকে। তবে চৈতীর জন্যই যেন ভালোবাসাটা উপচে পড়ছে সবার। কারণ শিমুলের নিয়মিতই দেখা মিলে নাটক-বিজ্ঞাপনে। কিন্তু চৈতী দীর্ঘদিন ধরে শোবিজ থেকে দূরে। হঠাৎ প্রিয় সেই সংলাপ আর বিজ্ঞাপনের নতুন গল্পে তার দেখা পেয়ে উচ্ছ্বসিত দর্শক। অনেকে চৈতীর সাম্প্রতিক জীবন যাপন সম্পর্কেও জানার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। অনুরোধ করছেন তিনি যেন নিয়মিত থেকে যান শোবিজে।
চৈতী কী ভাবছেন? জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আসলে এই বিজ্ঞাপনটি একটি অন্য আবেগের জায়গা থেকে করা। নস্টালজিয়ার একটি ব্যাপার ছিলো। তাই কাজটি করেছি নিজের আগ্রহের জায়গা থেকে। আমি সম্মানিত বোধ করছি বার্জারের আয়োজনে। অনেকদিন পর তাদের জন্য শোবিজে ফেরা হলো।
আমার ব্যক্তিগত অন্য অনেক ব্যস্ততা। ইচ্ছে থাকলেও সময় করে কাজ করা হয়ে উঠে না। তবে চেষ্টা করবো। যদি মনের মতো কাজে অংশ নেয়ার সুযোগ হয় তবে করতে চেষ্টা করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি এই বিজ্ঞাপনের আইডিয়া দিয়েছেন যিনি তাকে। আমার সহঅভিনেতা শিমুল, এর পরিচালক ও সকল কলাকুশলীদের অভিনন্দন জানাই। আর দর্শকদের জন্য অনেক ভালোবাসা। দীর্ঘদিন পর আমার প্রত্যাবর্তনে তারা যেভাবে রেসপন্স করেছেন সেটা সত্যিই আমার জন্য বিরাট আনন্দের ও প্রেরণার।’
এলএ/আরআইপি