দারুণ এক প্রতিভা নিয়ে পাকিস্তান দলে পা রেখেছিলেন মোহাম্মদ আমির। উঠতি তারকা হয়েই পাকিস্তানের হয়ে ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে অনন্য এক ভূমিকা রাখেন এই পেসার; কিন্তু এর পরের বছরেই এক কলঙ্কিত ঘটনায় অন্ধকারে চলে যায় এই উদীয়মান পেসারের ক্যারিয়ার।
Advertisement
২০১০ সালে চার টেস্ট, পাঁচ ওয়ানডে এবং দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড সফরে যায় পাকিস্তান। সেই সফরে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে তোলপাড় হয়ে যায় পুরো ক্রিকেট বিশ্বে। লর্ডসের সেই টেস্ট ম্যাচে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন সে সময়ের অধিনায়ক সালমান বাট ও দুই বোলার মোহাম্মদ আসিফ এবং মোহাম্মদ আমির।
কিন্তু আমিরের সে ঘটনায় যুক্ত থাকাটা সবাইকেই হতবাক করে দেয়। একটা ১৮ বছরের ছেলে কিভাবে এই ঘৃণিত কাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে পারে, এর উত্তর ওই সময় খুজে পাননি কেউই।
পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটানোর পর ২০১৬ সালে আবারো পাকিস্তান জাতীয় দলে ফিরেছেন আমির। তবে, এখনও সেই কলঙ্কিত ঘটনা সবসময় নাড়া দেয় তাকে। এমনকি পাকিস্তানের অন্য খেলোয়াড়দেরও। পাকিস্তানি এক সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার সেই ঘটনা আবারো তুলে ধরেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার আব্দুল রাজ্জাক। সেখানে রাজ্জাক বলেছেন, ফিক্সিং করায় আমিরকে থাপ্পড় মেরেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি।
Advertisement
আবদুল রাজ্জাক বলেন, ‘আফ্রিদি আমাকে বলেছিল, রুমে তাদেরকে একা ছেড়ে দিতে; কিন্তু রুম থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরে আমি থাপ্পড়ের আওয়াজ শুনতে পাই। আফ্রিদির কাছে এই থাপ্পড় খাওয়ার পরেই তার কাছে সত্য ঘটনা তুলে ধরেন আমির।’
রাজ্জাক আরও জানান যে, ওই ইংল্যান্ড সিরিজের আগে থেকেই পাকিস্তানের ম্যাচে ফিক্সিং করে আসছিল সালমান বাট। আর এই কথা রাজ্জাক তখনকার ওয়ানডে অধিনায়ক আফ্রিদিকে বললেও তিনি তা আমলে নেননি।
রাজ্জাক বলেন, ‘আমি আমার চিন্তার কথা আফ্রিদিকে বলেছিলাম; কিন্তু সে এটাকে আমার ভ্রান্তি বলে মনে করিয়ে দেয় এবং কোন কিছুই ভুল হচ্ছে না। কিন্তু ওয়েস্ট ইণ্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে আমি যখন বাটের সঙ্গে ব্যাটিং করছিলাম, আমি নিশ্চিত ছিলাম সে দলকে ডুবাচ্ছে। আমি অবাক হয়ে গেলাম, যখন সে ম্যাচের কৌশল অনুযায়ী খেলছিল না।’
রাজ্জাক আরও বলেন, ‘যখন বুঝতে পারলাম সে কিছু একটা করছে, তখন আমি তাকে সরাসরি বলি স্ট্রাইক দিতে। এমনকি কয়েক ওভারে সে দুই তিনটি ডট বল খেলার পর আমাকে স্ট্রাইক দিত। তখন আমি চাপে পড়ে আউট হয়ে যেতাম।’
Advertisement
স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর বাটকে দশ বছর, আসিফকে সাত বছর ও আমিরকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যদিও পরে সবারই সমান ৫ বছর করে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি কমিয়ে আনা হয়।
এএইচএস/আইএইচএস/পিআর