গাজীপুর সদর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘেরবাজারে বাসের ভাড়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে যাত্রীকে চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় বাসের চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাসের যাত্রীকে চাকায় পিষ্ট করে হত্যার ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সোমবার চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Advertisement
গ্রেফতার ‘আলম এশিয়া’ বাসের চালক রোকন উদ্দিন সোমবার দুপুরে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ময়মনসিংহের কংস নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার রোকন উদ্দিন (৩৫) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার লতিফপুর নয়াপাড়া এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে।
জয়দেবপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান বলেন, রোববার এক যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে হত্যার মামলার পর বাস চালক রোকন তার মাকে নিয়ে ময়মনসিংহের ধোবাউরা ও হালুয়াঘাট থানার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রোকন কংস নদীতে ঝাঁপ দেয়। পুলিশও তখন নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। তার মা কৌশলে আত্মগোপন করে চলে যায়। বাসের যাত্রী সালাহ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় জড়িত বাসের অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
নিহত বাসের যাত্রী সালাহ উদ্দিন (৩৫) স্থানীয় আতাউর রহমান মেম্বার বাড়িতে ভাড়া থেকে স্কটেক্স অ্যাপারেল নামের পোশাক কারখানার গাড়ি চালাতেন। তিনি ঢাকার আলু বাজার এলাকার মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে।
Advertisement
নিহতের স্ত্রী পারুল আক্তার জানান, শুক্রবার ঈদের ছুটিতে স্বামীকে নিয়ে ময়মনসিংহে বাবার বাড়ি যান। রোববার সকালে স্বামীকে নিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজারের ভাড়া বাড়িতে ফিরতে ময়মনসিংহ থেকে ‘আলম এশিয়া’ বাসে ওঠেন।
পথে বাসের ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে হেলপারের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাসের ভেতরেই স্বামী সালাহ উদ্দিনকে মারধর করেন বাসের হেলপার। মারধরের ঘটনাটি মুঠোফোনে বাঘের বাজার এলাকার স্বজনদের অবহিত করেন সালাহ উদ্দিন। বাসটি বাঘের বাজারে পৌঁছালে সালাহ উদ্দিন নেমে বাসের গতিরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় সালাহ উদ্দিনকে চাপা দিয়ে চালক দ্রুতগতিতে বাসটি নিয়ে ঢাকার দিতে চলতে থাকেন।
পারুল আক্তার বলেন, সালাহ উদ্দিন যখন গাড়ি থেকে নেমে যান তখন আমি নামতে চাইলে হেলপার বাধা দেন। পরে আমাকে নিয়ে বাসটি চলতে শুরু করে। এ সময় কান্নাকাটি শুরু করলে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া ফু-ওয়াং কারখানার সামনে নিয়ে বাসের গতি কমিয়ে আমাকে ফেলে দেন হেলপার।
মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনার পর জয়দেবপুর থানা পুলিশের সহায়তায় বাসটি আটক করা হয়। নিহতের ভাই জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ‘আলম এশিয়া’ পরিবহনের চালক ও তার সহকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সহকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Advertisement
শিহাব খান/এএম/এমকেএইচ