চার বছর বয়সী একমাত্র ছেলে মুন্তাসির আল মুবিনের নাকের অপারেশনের টাকা জোগাড় করতে পারছেন না ফটোসাংবাদিক বাবা মজিবর রহমান। রাজধানীর একটি ফটো এজেন্সিতে চাকরি করেন তিনি। আট মাস ধরে চোখের সামনে ছেলের কষ্ট করে শ্বাস নেয়া দেখে কাঁদছেন বাবা।
Advertisement
এর আগে গত বছর ভারতের শিলিগুড়ির একটি হাসপাতালে মুবিনের নাকের অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর ছেলেকে নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে না রাখতে পারায় কিছুদিন পরই নাকে ইনফেকশন হয়। এতে আবারও আগের মতো মাংস বেড়ে নাক বন্ধ হয়ে যায় মুবিনের। সেখানে বাংলাদেশি প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
শিলিগুড়ি যাওয়ার ছয় মাস আগে মজিবর ছেলেকে রাজধানীর জিরানী বাজার এলাকায় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (নাম মনে নেই) তখন মবিনের নাকের অপারেশন করার সাহস পাননি এবং অনেক টাকার ব্যাপার বলে জানান। এরপর রাজধানীর মিরপুরে ল্যাবএইডের একজন চিকিৎসককে দেখানো হয় মুবিনকে। সেখানেও চিকিৎসক জানান, এত কম সময়ে (মুবিনের বয়স তখন তিন বছর) অপারেশন করা যাবে না। একই সঙ্গে তিনিও বলেন অনেক টাকার ব্যাপার। সোমবার জাগো নিউজকে এমনটাই জানিয়েছেন মুবিনের বাবা মজিবর রহমান।
এসব জায়গায় কোনো চিকিৎসা না পেয়ে এবং ছেলের প্রতিনিয়ত শ্বাস নেয়ার কষ্ট দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ভারতে যাওয়ার। পরে শিলিগুড়িতে নিয়ে নাকের অপারেশন করা হয় মুবিনের।
Advertisement
সাংবাদিক মজিবর রহমান জাগো নিউজকে জানান, জন্মের পর সুস্থই ছিল মুবিন। দুই বছর বয়স হওয়ার পর দেখি ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে। এ সময় চোখ-মুখ লাল হয়ে ফুলে যাচ্ছে। ঢাকা অনেক চিকিৎসককে দেখানোর পর তারা ওষুধ দিয়েছেন, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। বরং দিন দিন তার সমস্যা বেড়েই যাচ্ছিল। দেশে কথাও সমাধান পাচ্ছিলাম না। বাধ্য হয়ে ভারতে গেছি। সেখানে অপারেশন ভালোই হয়েছে। কিছুদিন ভালোই ছিল। কিন্তু সবগুলো ওষুধ খাওয়াতে পারিনি। এছাড়া গ্রামের বাড়ি থাকায় ঠিকমতো নাক ওয়াস করা হয়নি। কিছুদিন পর আবারও আগের সমস্যা দেখা দেয়া এবং নাক ফুলে যাওয়ায় শিলিগুড়ির ওই হাসপাতালে যোগাযোগ করি। তারা লক্ষণ শুনে জানায়, ইনফেকশন হয়েছে, আবারও অপারেশন করতে হতে পারে।
তিনি বলেন, ওখানকার চিকিৎসার কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের ভুলেই এমনটা হয়েছে। আবার অপারেশন করতে আরও এক লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু কোনো টাকা নেই।
মজিবর বলেন, চোখের সামনে ছেলের শ্বাস নেয়ার কষ্ট দেখে দুই মাস ধরে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বীরহলি গ্রামের বাড়িতেই ছিলাম। এ কয়েক মাস অফিস করিনি, বেতনও পাইনি।
তিনি বলেন, তাড়াতাড়ি ছেলের অপারেশন করতে না পারলে হয়তো একদিন দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে। এমন চাকরি করি মানুষের কাছে হাতও পাততে পারি না। ১০ দিন হলো ঢাকায় এসেছি। আজ পর্যন্ত ছেলেটার একটা শার্ট নেয়ার টাকা জোগাড় করতে পারিনি।
Advertisement
আকুতির কণ্ঠে মজিবর বলেন, ভাই দোহাই লাগে আমার ছেলেটার জন্য এক লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দেন। অনেকে তো অনেক জায়গায় দান করছে দয়া করে আমাকে কিছু দিতে বলেন, আমার ছেলেটাকে বাঁচাই।
মুবিনকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন সাংবাদিক মজিবর রহমানের সঙ্গে ০১৭১৫-২২৭৯০৩।
এমএএস/পিআর