নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতন করে তালাবদ্ধ ঘরে দুদিন আটকে রেখেছেন বিজিবির সদস্য স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
Advertisement
বর্তমানে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ কাতরাচ্ছেন যন্ত্রণায়। তার দাবি, এ অবস্থার জন্য স্বামী দায়ী। তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানাই।
নির্যাতিত গৃহবধূ বন্যা আক্তার বলেন, ২৮ মে আমার বাবার বাড়ি প্রথম দফায় মারধর করে স্বামী। তারপর ওখান থেকে পূর্বধলা স্বামীর বাড়ি নিয়ে এসে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে তালাবদ্ধ ঘরে আটকে রাখে বিজিবির সদস্য স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এখানে আমার গোপনাঙ্গে লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। হাতে-পায়ে বুকে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। আঘাত করা হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে। দুদিন পর প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজনরা আমাকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নির্যাতিত গৃহবধূ বন্যা আক্তারের মা আলমিনা আক্তার জানান, তার মেয়ে বন্যা আক্তারের স্বামী ফারুক আহমেদ চট্টগ্রামে বিজিবির ৮ ব্যাটালিয়নে কর্মরত। দুই মাসের ছুটিতে এসে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী বন্যা আক্তারকে অমানুষিক নির্যাতন করে তালাবদ্ধ ঘরে আটকে রাখে দুদিন। এরপর প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Advertisement
আলমিনা আক্তার বলেন, মেয়ের আধা কাঠা সম্পত্তি স্বামীর নামে লিখে দিতে মেয়েকে বেঁধে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন চালায়। আমার মেয়েকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। এ ঘটনায় বন্যা আক্তারের ভাই শরীফ আল বেলাল বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নির্মম এ ঘটনার বিচার চেয়ে প্রতিবেশী মজিদা আক্তার বলেন, পূর্বধলার শিমুলকান্দি গ্রামের মৃত জহুর উদ্দিনের ছেলে ফারুকের সঙ্গে চার বছর আগে বিয়ে হয় বন্যার। স্বামী বিজিবিতে কর্মরত থাকায় প্রায়ই বিভিন্ন অজুহাতে বন্যার ওপর নির্যাতন চালায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রামে বিজিবি ৮ ব্যাটালিয়নে কর্মরত বন্যা আক্তারের স্বামী ফারুক আহমেদের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে নির্যাতিত গৃহবধূকে দেখতে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে যায় পুলিশ। গৃহবধূর অবস্থা দেখে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুজ্জামান জুয়েল।
Advertisement
তিনি বলেন, ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। তবে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কামাল হোসাইন/এএম/জেআইএম