কৃষি ও প্রকৃতি

লিচুর দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা

সবুজ পাতার ভেতরে লাল টুকটুকে লিচু। সারি সারি গাছে রঙিন লিচু দৃষ্টি আটকে দেয়। এ যেন লাল-সবুজের সমারোহ। বাগানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দৃষ্টি এড়াতে পারেন এমন সাধ্য কার আছে? এটা মেহেরপুর জেলার লিচু বাগানের চিত্র।

Advertisement

মধুমাসের অন্যতম ফল লিচু এবার সবার হাতের নাগালে। দাম সাধ্যের মধ্যে থাকায় সব শ্রেণির মানুষ লিচুর স্বাদ পাচ্ছেন। এ বছর ফলন বাড়ায় প্রচুর লিচু মিলছে বাজারে। তবে লোকসানের আশঙ্কায় এখনো অনেকেই বাগান থেকে লিচু সংগ্রহ করেননি।

মেহেরপুর জেলায় প্রতি বছরই বাড়ছে লিচু বাগান। ধান, পাটে লোকসান হওয়ায় অনেকে এখন বাগান করার দিকে নজর দিয়েছেন। এতে চাষিদের লাভের পাশাপাশি ক্রেতা-ভোক্তারাও পাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত লিচুর স্বাদ।

> আরও পড়ুন- বিষমুক্ত বাউকুল চাষের নতুন সম্ভাবনা

Advertisement

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি মৌসুম পর্যন্ত ফল দেওয়া লিচু বাগানের পরিমাণ ৫৯৭ হেক্টর। এ জেলার লিচু অন্যান্য জেলার চেয়ে স্বাদে কম নয়। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুর জেলার লিচুর কদর বেড়েছে। এতে বাগানকে ঘিরে পাইকারি ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও অনেক খুচরা ব্যবসায়ীর কর্মসংস্থান হচ্ছে।

এ বছর জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে মুম্বাই, মোজাফফরি ও চায়না থ্রি জাতের লিচু। প্রতি পণের দাম (৮০টি লিচু) ১২০-১৬০ টাকা পর্যন্ত। গত বছর স্থানীয় বাজারে প্রতি পণ লিচু বিক্রি হয়েছিল ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। এতে অনেকেই বঞ্চিত হয়েছিলেন লিচুর স্বাদ থেকে।

ব্যবসায়ীরা জানান, গাছে ফুল আসার পরেই সম্ভাব্য ফলন নির্ধারণ করে ব্যবসায়ীরা বাগান মালিকের কাছ থেকে লিচু কেনে। তখন থেকে লিচু সংগ্রহ পর্যন্ত ব্যবসায়ীরাই ওই বাগানের মালিক। পরিচর্যা ও বাগান পাহারার সব দায়িত্ব তাদের ওপর থাকায় বিনিয়োগ করেন ব্যবসায়ীরা। গত বছরের উচ্চমূল্য হিসেবে এবার যারা বাগান কিনেছিলেন; তারাই রয়েছেন বিপাকে। এ বছর দর কমে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা তাদের। তাই দর বাড়ার আশায় তারা কাঙ্ক্ষিত লিচু সংগ্রহ করছেন না।

> আরও পড়ুন- একটি আমের দাম ৬ হাজার টাকা

Advertisement

মেহেরপুর শহরের লিচু ব্যবসায়ী সাত্তার হোসেন বলেন, ‘মাসখানেক আগে থেকেই বাজারে আঁটি গাছের লিচু বিক্রি শুরু হয়। যার দর ছিল সবার হাতের নাগালে। কলম গাছের লিচু বিশেষ করে মুম্বাই, মোজাফফরি ও চায়না থ্রি লিচু বাজারে এসেছে দুই সপ্তাহ আগে।’

লিচু ক্রেতা রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘কলম গাছের লিচুর দাম প্রতি বছর একটু বেশি থাকলেও এবার সাধ্যের মধ্যে। ফলে সব শ্রেণিপেশার মানুষ লিচু কিনতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’

আসিফ ইকবাল/এসইউ/এমএস