দেশজুড়ে

পদ্মা পার হতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনছেন ঈদ ঘরমুখো যাত্রীরা

আসন্ন ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত মানুষেরা নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে হাজারো দুর্ভোগ শিকার করে গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন ফরিদপুর, সদরপুর, ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন, নগরকান্দা অঞ্চলের লোকজন। শনিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই নৌ-রুটে ট্রলার ও স্পিডবোটের যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। তবে যাত্রীদের চাপ সহনীয় থাকলেও যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Advertisement

অতিরিক্ত ভাড়া, ফিটনেসবিহীন স্পিডবোট ও ট্রলারসহ হাজারো বিড়ম্বনার শিকার হয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ৬ কি. মি. পদ্মা নদী পার হচ্ছেন এসব ঘরমুখো মানুষ। অতিরিক্ত ভাড়া না দিলে যাত্রীদের মারধরসহ ও নানা হয়রানি করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পদ্মা নদী পার হয়ে আসা শাহাদাৎ হোসেন জানান, সকালে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও এলাকা থেকে রওয়ানা হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় মৈনট ঘাটে পৌঁছি। ঘাট কর্তৃপক্ষ অগ্রিম ২০০ টাকা নিয়ে স্পিডবোটের একটি টিকিট দিলেও তাতে কোনো মূল্য উল্লেখ ছিল না। রোজা থাকা অবস্থায় প্রচণ্ড খরতাপের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে স্পিডবোটে ওঠার সিরিয়াল পাই। কিন্তু নদী পার হতে গিয়ে খোলা স্পিডবোটে ঢেউয়ের পানিতে ভিজতে হয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

শনিবার পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটে সরেজমিনে জানা যায়, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে যাত্রী পরিবহনের জন্য পদ্মার দুপাড়ে দুটি ঘাটে মোট ৩০টি স্পিডবোট ও ২০টি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি ছোট স্পিডবোটে ১০ জন এবং বড় স্পিডবোটে ২০ জন করে যাত্রী পরাপার করা হচ্ছে। ট্রলারে যাত্রী বোঝাইয়ের কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ নেই। ট্রলারের ভেতরের অংশে ও ছইয়ে কানায় কানায় পূর্ণ অবস্থায় পারাপার হচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। এতে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়লে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।

Advertisement

ট্রলারযাত্রী সোহেল রানা বলেন, আমি ঢাকায় পেটে-ভাতে রঙয়ের কাজ শিখছি। আসার সময় ঈদ বকশিস হিসেবে গেরেজ মালিক ৫০০ টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা দিয়েই বাড়ি যাচ্ছি। ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে এসে পদ্মা নদী পার হতে অগ্রিম টিকিট কেটে ট্রলারে উঠি। কিছুদিন আগে ঢাকা যাওয়ার সময় এ ঘাটেই ট্রলারে ৮০ টাকা ভাড়ার স্থলে আকুতি (অনুরোধ) করে ৬০ টাকা দিয়ে পদ্মা পার হয়েছি। মাত্র কদিনের ব্যবধানে ঈদে বাড়ি ফিরতে গিয়ে আজকে ট্রলার ভাড়া দিতে হয়েছে ১২০ টাকা।

তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, মাত্র ৬ কি. মি. নদী পার হতে এত টাকা ভাড়া আদায় চরম অমানবিক।

জানতে চাইলে গোপালপুর ঘাটের ইজারাদার মো. শাহীন শিকদার বাবুল বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখন যাত্রীরা শুধু ওপারের মৈনট ঘাট দিয়ে বাড়ি ফিরছেন। তাই এ ঘাটে (গোপালপুর) ভাড়া বৃদ্ধি করার কোনো সুযোগ নেই। ঈদ শেষে ঢাকামুখী যাত্রীরা যখন এ ঘাট দিয়ে ওপারে যাবে তখন ভাড়া বেশি নিলে দেইখেন।

এ ব্যপারে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা বলেন, পদ্মা নদীর মৈনট ঘাটটি ঢাকার দোহার উপজেলার আওতায়। তাই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই ঘাটটি দেখাশোনা করবেন। উপজেলার গোপালপুর ঘাট থেকে ঈদের নামে অতিরিক্ত কোনো ভাড়া আদায় হচ্ছে না বলে তিনি জানান।

Advertisement

বি কে সিকদার সজল/এমবিআর/এমএস