আন্তর্জাতিক

সাত মামলার আসামি সারেঙ্গি!

মোদির মন্ত্রিসভার সব মন্ত্রীদের মধ্যে যার প্রতি মানুষের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ তিনি হলেন, শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি। এবার লোকসভা নির্বাচনে ওড়িশার বালাসোর আসন থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি। তার রাজ্যের মানুষ তাকে বলেন, ‘ওড়িশার মোদি’। বালাসোরে বিজু জনতা দলের প্রার্থী রবীন্দ্র কুমার জেনাকে ১২ হাজার ৯৫৬ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি।

Advertisement

অত্যন্ত সাধারণ জীবন-যাপনের জন্য সবার কাছে জনপ্রিয় সারেঙ্গি। সাধারণ গোছের সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি, মাথায় উস্কো খুস্কো চুল নিয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোদির মন্ত্রিসভার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি।

তাকে নিয়ে লোকজনের উন্মাদনার শেষ নেই। সামাজিক মাধ্যমে তার লাখ লাখ ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ শহুরে জীবনের চাকচিক্য, বিলাস, সুবিধা থেকে তিনি অনেক দূরে। বালাসোরের এক ঝুপড়ি বাড়িই তার স্থায়ী ঠিকানা।

দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করলেও একটা সাইকেল ছাড়া তার কোনো বাহন নেই। আর থাকার জায়গা বলতে খড়ে ছাওয়া একটা কুঁড়ে ঘর। আর এসব কারণেই খুব সহজেই মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং পশুপালন, ডেইরি ও মৎস্য দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ৬৪ বছর বয়সী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি।

নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, তিনি নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ১৫ হাজার রুপি। তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেড় লাখ রুপি এবং স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১৫ লাখ রুপি।

তার হলফনামা থেকে আরও জানা গেছে যে, তার নামে সাতটি মামলা ছিল, যেগুলো মুলতবী ঘোষণা করা হয়েছে। ভয়-ভীতি প্রদর্শন, দাঙ্গা, বিভিন্ন ধর্মের লোকজনের মধ্যে শত্রুতা প্রচার, চাঁদাবাজিসহ আরও বেশ কিছু মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ওড়িশায় বিজেপি-বিজেডি জোটের সরকারের সময়ই বেশিরভাগ মামলা হয়েছিল।

শিশুসহ পুরো একটি পরিবারকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান মিশনারি গ্রাহাম স্টেইন এবং তার ১১ ও ৭ বছর বয়সী দুই ছেলেকে পুড়িয়ে মারা হয়। বিজেপির বজরং দল এই ঘটনা ঘটায়, যার নেতৃত্বে ছিলেন সারেঙ্গি।

Advertisement

অনেক আগে থেকেই মোদির প্রিয়ভাজন তিনি। এবারের লোকসভা ভোটে প্রতাপ সারেঙ্গি জিতে যাওয়ায় মোদি বেশ খুশি। মোদি যখনই ওড়িশায় যান, তখনই তিনি সারেঙ্গির সঙ্গে দেখা করেন। সে কারণে সারঙ্গির জয়ে মোদির খুশি হওয়ারই কথা।

অপরদিকে, মোদি আর সারেঙ্গির বেশ কিছু বিষয়ে মিল আছে। দু'জনই আধ্যাত্মিক জীবন-যাপন পছন্দ করেন। মোদির বিরুদ্ধে মামলা ছিল। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সে সময়কার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে সময় দাঙ্গায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। কিন্তু ২০১২ সালে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) ওই মামলা থেকে মোদিকে নির্দোষ ঘোষণা করে।

টিটিএন/জেআইএম