মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহাঅনুগ্রহের মাস রমজান। এ মাসে মুমিন বান্দা তাকওয়া অর্জনের পথে ধাবিত হয়। কুরআনের আলো দ্বারা নিজেকে আলোকিত করার প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। এ মাসের শেষ দশকের মর্যাদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
Advertisement
শেষ দশকে এমন কিছু অল্প আমল রয়েছে, যে আমলের রয়েছে অনেক ফজিলত ও সাওয়াব। এ দশকেই পবিত্র লাইলাতুল কদর তালাশ করবে মুমিন। এ রাতের আমল অল্প হলেও সাওয়াব দেয়া হবে হাজার মাসের সমান। আমলগুলো হলো-
>> সুরা ইখলাস বেশি বেশি পড়ারমজানের শেষ দশকে বেশি বেশি সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করা। যে ব্যক্তি ৩ বার সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তিকে পুরো কুরআন তেলাওয়াতের সাওয়াব দান করবেন কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন ঘোষণা করলেন-
আরও পড়ুন > পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের রাকাআত সংখ্যা
Advertisement
‘তোমাদের মধ্যে কেউ কি রাতে (ঘুমানোর সময়) এক-তৃতীয়াংশ (১০ পাড়া) কুরআন পড়তে পারবে? সাহাবাগণ আরজ করলেন, এটা কেমন করে সম্ভব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- কুল হুয়াল্লাহু আহাদ' (সুরা ইখলাছ) কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। (বুখারি ও মুসলিম)
সে হিসেবে রাতে ঘুমানোর সময় একবার সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করলে ১০ পারা কুরআন তেলাওয়াত করার সাওয়াব পাওয়া যাবে। হয়। আর ৩ বার সুরা ইখলাস পাঠে পুরো ৩০ পাড়া কুরআন তেলাওয়াতের সাওয়াব পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন > নামাজে দ্রুত রুকু-সেজদা ও এদিক-ওদিক তাকানো যাবে কি?
>> সারারাত ইবাদতের সাওয়াব লাভমুমিন বান্দা রমজানের শেষ দশকে অবশ্যই রাত জেগে ইবাদত করবে ঠিকই কিন্তু সারারাত ধারাবাহিকভাবে ইবাদত করা অত্যন্ত কষ্টকর।
Advertisement
তবে মুমিন বান্দার জন্য এমন একটি সহজ আমল রয়েছে, যার মাধ্যমে সারারাত ঘুমিয়েও পূর্ণরাত ইবাদত বন্দেগি করার সাওয়াব লাভ করবে। আর তাহলো রমজানের ইশা এবং ফজর নামাজ জামাআতের সঙ্গে আদায় করা। হাদিসে এসেছে-
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ইশার নামাজ জামাআতের সঙ্গে আদায় করলো, সে যেন অর্ধরাত পর্যন্ত নামাজে অতিবাহিত করলো। আর যে ইশা এবং ফজর নামাজ জামাআতে আদায় করলো, তবে ওই ব্যক্তি সারারাত নামাজে অতিবাহিত করলো। (তিরমিজি)
তাই মুমিন বান্দার উচিত অন্তত রমজানের শেষ দশকে ইশা এবং ফজরের নামাজ অবশ্যই জামাআতের সঙ্গে আদায় করা।
সুতরাং রমজানের শেষ দশকে ছোট আমল দু'টি পালন করা সবার জন্যই সহজ। আর এ সহজ কাজের মাধ্যমে অর্জিত হবে পবিত্র লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও সাওয়াবসহ অনেক উপকারিতা এবং সাওয়াব।
আরও পড়ুন > নামাজের জন্য অপেক্ষা করার ফজিলত
>> বেশি বেশি দান করাশেষ দশকে ইশা এবং তারাবিহ নামাজ আদায় করে গরিব অসহায়দের মাঝে মুক্ত হস্তে দান করায় রয়েছে অনেক সাওয়াব। রাত ছাড়াও দান করা যাবে। দান-সাদকা এমনিতেই অনেক মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। কারণ দান-সহযোগিতার ফলে অসহায় দারিদ্র-পীড়িত মানুষে আহার মিলে। অন্তর পরিতৃপ্ত হয়। মনের অজান্তে দানকারীর জন্য দোয়া চলে আসে। যা দানকারীর জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।
সুতরাং রমজানের শেষ দশকে এসে প্রত্যেক মুমিন মুসলমান রোজাদারের উচিত প্রতি রাতেই অসহায় গরিব-দুঃখী মানুষকে দান-সহযোগিতা করা।
যদি দান-সাদকার রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদরের আগমন ঘটে তবে দানকারীর জন্য তা মহা সৌভাগ্যের বিষয়। কেননা এ রাতের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আর এ রাতের দান হাজার মাসের দানের চেয়েও উত্তম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক রোজাদার মুমিন মুসলমানকে শেষ দশকে প্রত্যেক রাতে এ ক্ষুদ্র ৩টি আমল করার মাধ্যমে অনেক বেশি সাওয়াব ও মর্যাদা প্রাপ্তি নিজেদের আত্ম নিয়োগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম