দেশজুড়ে

নার্সের ইনজেকশনে মৃত্যুর মুখে, ৩ দিনেও জ্ঞান ফেরেনি ছাত্রীর

তিন দিনেও জ্ঞান ফেরেনি গোপালগঞ্জে নার্সের ভুল ইনজেকশনে মৃত্যুর মুখে পড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মরিয়ম সুলতানা মুন্নির।

Advertisement

মরিয়ম সুলতানা মুন্নিকে ভুল ইনজেকশন পুশ করে জীবন বিপন্ন করার ঘটনায় জড়িত চিকিৎসক ও দুই নার্সকে চাকরিচ্যুতসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেন। এ সময় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চার দফা দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- অভিযুক্ত চিকিৎসক ও দুই নার্সকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা, মুন্নির চিকিৎসার ব্যয়ভার ও ক্ষতিপূরণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বহন করা, বিষয়টিকে সাধারণ ভুল হিসেবে মন্তব্য করায় শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা ও জেলা প্রশাসককে বিষয়টি তদারকি করা।

Advertisement

ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলি কমিউনিকেশন ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলম, সমাজবিজ্ঞান প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. তারেক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দীকা প্রমুখ।

জানা যায়, মরিয়ম সুলতানা মুন্নি পিত্তথলিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল মতিনের তত্ত্বাবধানে একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তপন মন্ডলের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মুন্নি।

সোমবার রাতে হঠাৎ হাসপাতালে মুন্নির পোস্ট এনেস্থেটিক একটিভিটি সম্পন্ন করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তার অপারেশন করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী হাসপাতালের ফিমেল ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ সকালে রোগীর ফাইল না দেখে গ্যাসট্রাইটিসের ইনজেকশন সারজেলের পরিবর্তে অ্যানেস্থেসিয়ার (অজ্ঞান কারার) ইনজেকশন সারভেক ওই রোগীর শরীরে পুশ করেন। এই ইনজেকশন দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মুন্নি। তার অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার তাকে খুলনা আবু নাসের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

এ ব্যাপারে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও মুন্নির চিকিৎসক তপন মন্ডল বলেন, নার্স ভুল ইনজেকশন পুশ করার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ইনজেকশন দেয়ার আগে রোগীর ফাইল দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সের ভালো করে দেখে নেয়ার কথা ছিল। রোগীর ফাইল ভালো করে না দেখায় এমন ঘটনা ঘটেছে। নার্সের একটু অবহেলায় ঝুঁকিপূর্ণ হলো ওই ছাত্রীর জীবন।

Advertisement

এ ঘটনায় হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আগামী শনিবার কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে কমিটির।

অন্যদিকে, মুন্নির চাচা জাকির হোসেন বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ থানায় চিকিৎসক তপন কুমার মন্ডল ও দুই নার্স শাহনাজ ও কুহেলিকাকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন।

এস এম হুমায়ূন কবীর/এএম/পিআর