স্বাস্থ্য

ভিসির পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল বিএসএমএমইউ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএসএমএমইউ) ২০০ মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল বাতিল ও উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন পরীক্ষার্থীরা।

Advertisement

সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো তারা ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করেছেন। পরীক্ষা বাতিল ও ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন তারা।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে নজিরবিহীন অনিয়ম হয়েছে। ভিসি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ তাদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে পরীক্ষার ফলাফলে টেম্পারিং করা হয়েছে।

তারা জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারা বিভিন্ন কোর্সে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়েই তাদের চাকরি হবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন। লিখিত পরীক্ষাও তাদের ভালো হয়েছে। অনিয়মের কারণেই বাদ পড়েছেন বলে মনে করছেন তারা।

Advertisement

এদিকে উত্তাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাস ও ভিসির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা ও বিএসএমএমইউ’র অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। তবে ভিসি কার্যালয়ে নেই বলে জানা গেছে।

গত ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত ২০০ ডাক্তার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল গতকাল (রোববার) প্রকাশিত হয়। ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার ও ২০ জন ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন।

লিখিত পরীক্ষায় ১ পদের জন্য ৪ জনকে পাস করানো হয়। এ হিসাবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। চূড়ান্ত নিয়োগের লক্ষ্যে তাদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে।

ফলাফল ঘোষণার পরপরই সুযোগ বঞ্চিত চিকিৎসকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ‘ছেলের জন্য সাজানো নিয়োগ, লজ্জা, ভিসি লজ্জা, ভিসির পদত্যাগ চাই!, অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ মানি না, মানবো না, প্রশ্নফাঁসের এ নিয়োগ কাদের জন্য, আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে ইত্যাদি স্লোগান লেখা পোস্টার সেটে দেন।

Advertisement

সোমবার দুপুরে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে বিএসেএমএমইউ ভিসির সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বারবারই ব্যস্ত পাওয়া যায়।

এদিকে ফলাফল প্রকাশের পর তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ মেধারভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। মেধাবীরাই চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না। ’

আজ দুপুরে বিএসএমএমইউ রেজিস্ট্রার ডা. মো. আবদুল হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশিত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের আগে ও পর থেকেই সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২০টি মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা ছাড়াই তাদের নিয়োগ নিতে সাবেক ও বর্তমান ভিসির ওপর চাপ দিতে থাকেন। প্রায় ৯ মাসব্যাপী তারা আন্দোলনের নামে দফায় দফায় ভিসির অফিস, বাসভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও ও ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মেধার ক্ষেত্রে কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার না করতে নির্দেশনা দেন। তবে চাকরিবঞ্চিত চিকিৎসকরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফলাফল প্রকাশে অনিয়ম না হলে তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি পাবেন।

এমইউ/জেডএ/এমকেএইচ