জাতীয়

সব ফাইল নিষ্পত্তি করছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

স্থানীয় সরকার বিভাগের সব ফাইলই নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর কাছে যাচ্ছে। যদিও কাজে গতিশীলতা আনতে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ফাইল নিষ্পত্তির রেওয়াজ রয়েছে।

Advertisement

তবে মন্ত্রণালয়ের কাজ নজরদারির মাধ্যমে শৃঙ্খলার মধ্যে রাখতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

গত ২ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসন-১ শাখা থেকে উপ-সচিব জুলিয়া মঈন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ জারি করা হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থানীয় সরকার বিভাগের সকল নথি মন্ত্রীপর্যায়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।

আরও পড়ুন >> বহুদিন গোসল না করে অফিস করেছি : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

Advertisement

পরে অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের সকল অতিরিক্ত সচিব, মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের অনুলিপি দেয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আইন ও বিধি-বিধান নিয়ে কাজ করেন এবং সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কর্মকর্তারা জানান, কোন ফাইল কোনপর্যায়ে নিষ্পত্তি হবে আইন বা বিধি-বিধান দিয়ে তা নির্ধারিত নয়। তবে প্রশাসনের রেওয়াজ অনুযায়ী, সাধারণত নীতি-নির্ধারণী বিষয়ের ফাইল মন্ত্রী পর্যন্ত যায়। এছাড়া সাধারণ বিষয়ের (রুটিন কাজ) ফাইল সচিবপর্যায়ে নিষ্পত্তি হয়। সচিব হলেন কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রশাসনিক প্রধান ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা।

তারা আরও জানান, গুরুত্ব অনুযায়ী একেবারে সাদামাটা বিষয়গুলো উইং প্রধান বা অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ে নিষ্পত্তি হয়। তবে মন্ত্রী চাইলে নিজেও সব ফাইল নিষ্পত্তি করতে পারেন। তবে মন্ত্রীদের এত বহুমুখী কাজ করতে হয় যে সব ফাইল নিষ্পত্তি তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক। এতে ফাইল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিলম্বেরও সম্ভাবনা থাকে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি যেহেতু নতুন মন্ত্রী হয়েছি, সব ধরনের ফাইল যদি আমার পর্যায়ে নিষ্পত্তি হয়, কারণ আমি তো সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা), আমি যদি মনে করি সব ফাইল আমি নিষ্পত্তি করব- এটা তো খুব ভালো ও খুশির কথা।’

Advertisement

আরও পড়ুন >> ৫২ প্রতিষ্ঠানের ভেজাল পণ্য : দুই সচিবসহ ৫ জনকে আইনি নোটিশ

তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের সিইও হিসেবে প্রধান নির্বাহী ওয়ার্ক ডিস্ট্রিবিউশন করে দেবেন। তিনি কতটুকু করবেন সেগুলো ঠিক করে নিতে পারেন।’

সব ফাইল মন্ত্রীপর্যায়ে গেলে দীর্ঘসূত্রিতার সম্ভাবনা থেকে যায় কি না- এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার লেভেলে তো কোনো ফাইল জমে থাকে না। একদিন দুদিন হয়তো কোনো কারণে থাকতে পারে। ইট ডাজন্ট মিন যে, দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যে পড়বে। যাতে ডিকটেশন দিতে না হয় সেজন্য আমি নিজেই কাজ করছি, অটোমেশন করছি, ফাইল মুভমেন্ট দেখার জন্য অটোমেশন করতে বলেছি। তাই আমাদের পর্যায়ে ফাইল নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

গুরুত্ব অনুযায়ী সচিব বা অতিরিক্ত সচিবপর্যায়ে ফাইল নিষ্পত্তি হলে কাজ সহজ হয় কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি যদি পাওয়ার ডেলিগেট করি, কোনটা প্রতিমন্ত্রী করবেন, কোনটা আমি করব, কোনটা সচিব করবেন, কোনটা অতিরিক্ত সচিব করবেন- সেটা আমরা সেগরিগেট করতে পারি।’

‘আগেও আমার কাছে ম্যাক্সিমাম ফাইল আসত। আসত না এমন ফাইলের সংখ্যা ছিল খুবই কম। এখন সব ফাইল আসার পর খুব যে লোড বেড়েছে, আমার কাছে তা মনে হচ্ছে না। আমি অফিস থেকে আসার আগে প্রায় সব ফাইলই নিষ্পত্তি করে আসি।’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যবস্থা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত আমরা অভিজ্ঞতা ভালো, আরও দেখি কী হয়। সবার আমাকে অ্যাপ্রিসিয়েট করা উচিত যে আমি এতটুকু ওয়ার্ক লোড নিচ্ছি। সকল ফাইল আসলে বুঝতে পারব কাকে দিয়ে কোনটা করাতে পারব।’

আরও পড়ুন >> সোয়া লাখ গৃহহীন পাবেন নতুন ঘর

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জাতির জন্য কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের তো অন্যকোনো উদ্দেশ্য নেই। আমাদের একমাত্র এজেন্ডা হলা দেশ ও দেশের মানুষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শ্রম ও ত্যাগের বিনিময়ে অগ্রজদের নিয়ে দেশকে এত দূর নিয়ে এসেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি হয়তো মনে করেছেন আমরা আরও বেশি তরুণ, তাদের চেয়ে আরও বেশি এনারজেটিক হবো। মানুষের জন্য আমরা উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চাই। কতটুকু পারব জানি না। তবে হৃদয় দিয়ে কাজ করব।’

আরএমএম/এমএআর/এমএস