জ্বলন্ত উনুনে ফুটন্ত তেলের মধ্যে ডানহাত ঘুরিয়ে শাহি জিলাপির কয়েক প্যাঁচ দেন মধ্যবয়সী খোরশেদ মিয়া। কয়েক সেকেন্ড পর বা হাতে থাকা লম্বা একটি লাঠি দিয়ে জিলাপিতে খোঁচা দিলেই তা ফুলে উঠে। কিছুক্ষণ ভাজার পর আরেকবার জিলাপির এক পিঠে আড়াআড়িভাবে নকশা তোলেন। নকশা তোলার পর শাহি জিলাপি পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়। ভালমতো ভাজার পর ছাড়া হয় চিনির সিরায়। সিরায় ভেজানোর পর তামাটে রূপ ধারণ করে শাহি জিলাপি।
Advertisement
মঙ্গলবার (৭ মে) রমজানের প্রথমদিনে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বাজারে এভাবেই শাহি জিলাপি তৈরি করতে দেখা যায়।
ইফতার সামগ্রীতে হরেক রকম আইটেম থাকলেও শাহি জিলাপির দিকে দৃষ্টি সবার। এর কারণও রয়েছে। বিশাল সাইজের একেকটি জিলাপির ওজন এক থেকে দুই কেজি পর্যন্ত হয়। এক জিলাপিতেই হয়ে যায় পরিবারের সবার।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আগতদের অনেকেই প্রতিকেজি শাহি জিলাপি ২শ’ টাকা করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদা বেশি থাকায় উনুনের পাশে থাকা জিলাপি প্রস্তুতকারক রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠছিলেন।
Advertisement
শাহ আলম নামে জিলাপির দোকানের এক কর্মচারী জানান, প্রতি বছরই তারা তিনভাই মিলে শাহি জিলাপির দোকান চালান। শাহি জিলাপির পাশাপাশি ছোট জিলাপিও তৈরি করেন তারা।
তিনি বলেন, শাহি জিলাপি দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি সাইজেও বড়। এর একটি বাসায় নিলে পরিবারের সবার হয়ে যায়। এ কারণে অনেকেই শাহি জিলাপি কিনতে আগ্রহী হন।
ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ লালবাগের বাসিন্দা হাশমত আলী জানান, প্রতি বছর রমজানের প্রথম দিনে তিনি ছেলের ঘরের নাতি-নাতনিদের জন্য বাসায় শাহি জিলাপি কিনে নিয়ে যান। মেয়ের ঘরের নাতি-নাতনিদের জন্যও শাহি জিলাপি, হালিম ও দইবড়া কিনে পাঠান। চকবাজারের ইফতার ছাড়া ইফতার পানসে লাগে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শুধু পুরান ঢাকাতেই নয় নতুন ঢাকার অনেকেই চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার বিশেষ করে শাহি জিলাপির ভক্ত। নতুন ঢাকা থেকে আগতদেরও শাহি জিলাপি কিনতে দেখা গেছে।
Advertisement
এমইউ/এমবিআর/পিআর