চোখের পলক পড়ছে না। পা থেকে মাথা পর্যন্ত আপাদমস্তক স্বর্ণখচিত বর্ম গায়ে তার। পরতে পরতে স্বর্ণ থেকে ঠিকরে বেরুচ্ছে আলো। তুরস্কের ইস্তাম্বুলের তোপকাপি প্রাসাদের ঐতিহাসিক জাদুঘরের ভেতরে রোমান সাম্রাজ্যর বিভিন্ন নিদর্শনের একটি দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হওয়ার দশা।
Advertisement
বেশ কিছু যাদুঘরের ভেতরের ছবি তোলার অনুমতি থাকলেও মহামূল্যবান এ নিদর্শনগুলোর ছবি তোলা নিষেধ। নিষেধ থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য পর্যটকদের কেউ কেউ স্মৃতি ধরে রাখতে মোবাইলে ক্লিক করছেন। তবে বাজপাখির মতো কোথা থেকে ছুটে এসে ‘নো পিকচার’ ‘নো পিকচার’ বলে ছবি তোলা বন্ধ করতে বললেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
সম্প্রতি টার্কিশ এয়ারলাইন্সের আমন্ত্রণে মিডিয়া ট্যুর ২০১৯-এর সদস্য হিসেবে তোপকাপি প্রাসাদের মহামূল্যবান জাদুঘরটি সরেজমিন পরিদর্শনকালে সকলেই একাধারে বিমোহিত ও বিস্মিত হন। বিশাল আকারের তরবারি, ছুরি, বন্দুক, পোশাকাদি ও মুদ্রা ইত্যাদি দেখে পর্যটকদের মনে নানা প্রশ্ন জাগে।
সঙ্গে থাকা গাইডরা একাধারে বিবরণ দিতে থাকলেন রাজা-বাদশাহরা কোন আমলে কোন ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতেন, পোশাকাদি পরতেন ইত্যাদি। একেক শাসনামলে ব্যবহৃত মুদ্রা সম্পর্কেও ধারণা দিতে লাগলেন তারা।
Advertisement
জাদুঘরের ভেতরে রাখা একটি ৬-৭ফুট লম্বাকারের একটি তরবারি উপস্থিত পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমরা গাইডকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তলোয়ারটি যদি এত বড় হয় তাহলে মানুষগুলো কত লম্বা ছিলেন?’ জবাবে মুচকি হেসে গাইড জানালেন, ওই আমলের মানুষগুলো অনেক লম্বা আর শক্তিশালী ছিলেন। যুদ্ধের ময়দানে একেকজন সৈন্যের সঙ্গে তার শরীরের ওজনের অর্ধেকের বেশি অস্ত্র ও বর্মসহ বিভিন্ন প্রযোজনীয় সামগ্রী থাকত। এত ভারি বোঝা নিয়ে তারা দিনের পর দিন যুদ্ধক্ষেত্রে কীভাবে অবস্থান করতেন তা হতবাক করার মতো ব্যাপার!
সরেজমিন পরিদর্শনকালে তোপকাপি প্রাসাদে অবস্থিত পার্লামেন্ট (যেখানে বিচার-আচার হতো), সুলতানদের বসার জায়গা, উপবাস শেষে খাবার গ্রহণের স্থানসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখে মুগ্ধ হতেই হয় পর্যটকদের।
এমইউ/এসআর/এমকেএইচ
Advertisement