কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি রৌশন আরার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Advertisement
আজ সোমবার রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের প্রেস অনুবিভাগ থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ রৌশন আরার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। তিনি মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অপরদিকে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
গত ৩ মে রৌশন আরা বেগম মিশনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। কঙ্গোতে পৌঁছান ৪ মে। আর ৫ মে অর্থাৎ সেখানে পৌঁছানোর পরদিনই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। দেশটির কিনশাসা নামক স্থানে স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রৌশন আরা বেগমকে বহনকারী গাড়ির চালকসহ বাকি দুইজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পুলিশের এসপি (কমান্ডার) ফারজানাও রয়েছেন।
Advertisement
বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন রৌশন আরা বেগম। মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ঢাকায় শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমি, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৪ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে কক্সবাজারে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর একই পদে টাঙ্গাইল, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন।
রৌশন আরা ১৯৯৮ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে মুন্সীগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর তিনি অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পান।
এই পুলিশ কর্মকর্তা দেশের বাইরে যুক্তরাজ্যের পুলিশ স্টাফ কলেজ, ব্রামশিল থেকে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং কোর্স এবং লিডারশিপ কোর্স ফর ফিমেললিডার’স ইন ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।
পুলিশ বাহিনীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দুইবার আইজিপি ব্যাচপ্রাপ্ত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুলিশ পদক ‘পিপিএম’ লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ‘অনন্যা শীর্ষ দশ-১৯৯৮’ পুরস্কার ও ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন পুলিশের স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১২ লাভ করেন।
Advertisement
রৌশন আরা বেগম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন্স নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি এক কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন।
রাজধানী ঢাকার মগবাজারের সাবেক টিএন্ডটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ভিকারুননিসা-নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন রৌশন আরা। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (অনার্স), এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
এইউএ/এসআর/আরআইপি