গত মাসে শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অ্যাসস-এর মালিক অ্যান্ডার্স হোল পওলোসনের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তিন সন্তানকে হারিয়ে এ ধনকুবের শোকে কতটা মূহ্যমান হয়ে পড়েছেন, তা বোঝার সাধ্য হয়তো অনেকেরই নেই।
Advertisement
কিন্তু শনিবার (৪ মে) তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন দেখে পওলোসনের বেদনার অনেকটাই স্পর্শ করতে পেরেছে ডেনমার্কবাসী। গতকাল দেশটির আর্বাস ক্যাথিড্রালে তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এ সময় ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেনসহ রাজ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তিন সন্তানকে বিদায় দিতে তাদের কফিনগুলো নীল, লালসহ নানা রঙের ফুলে সাজান পওলোসন। আর্বাস ক্যাথিড্রালে কফিনগুলো পৌঁছানোর পর হামলার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আসট্রিড একটি কফিনে লাগানো বেলুনের সূতা কাটেন। এ সময় তার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন পওলোসন ও অ্যানি।
Advertisement
আস্ট্রিডের তিন ভাইবোনকে বিদায় জানাতে সেখানে আসেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেনসহ রাজ পরিবারের সদস্যরা। তার স্ত্রী ম্যারি এ সময় মেয়ে ইসাবেলাকে জড়িয়ে ধরে পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন পওলোসনের কোম্পানির কর্মচারিরা।
গত ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে অবস্থিত শাংরি-লা হোটেলে বোমা হামলার সময় স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানেই ছিলেন মি. পওলোসন। এ ঘটনায় ছোট মেয়ে আসট্রিড ও স্ত্রীসহ তিনি বেঁচে গেলেও, নিহত হয় ছোট ছেলে আলফ্রেড এবং দুই মেয়ে আলমা ও আগনেস। তবে মারাত্মকভাবে আহত হন পওলোসন।
এ ঘটনায় পুরো ডেনমার্কে শোকের ছাঁয়া নেমে আসে। আলফ্রেড, আলমা ও আগনেসের স্মৃতির প্রতি স্মরণ রেখে মশাল হাতে মৌন মিছিল করে দেশটির স্টাভট্রাপ শহরের বাসিন্দারা।
গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত এক স্মরণ সভায় মি. পওলোসন তার তিন সন্তানকে হারানোর ঘটনাকে ‘বর্ণনাতীত ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন। তবে এ ঘটনায় সহমর্মিতা, ভালবাসা ও পাশে থাকার জন্য তিনি তার স্বজন, প্রতিবেশি ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
Advertisement
শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে ভয়াবহ সিরিজ হামলার পেছনে দায়ী সন্দেহভাজন মূল হোতা জাহরান হাশিম। কলম্বোর শাংরি-লা হোটেলে তিনিই হামলা চালান। গত ২৬ এপ্রিল জাহরান হাশিমের বাবা এবং দুই ভাই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
সূত্র : ডেইলিমেইল
এমএসএইচ/জেআইএম