হ্যারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আগামী শুক্রবার (৩ মে) নাগাদ ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এরপর এ উপকূল ছুঁয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশর ভূখণ্ড অতিক্রম করতে পারে।
Advertisement
তবে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আসা-না আসার বিষয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু জানাতে চান না বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদরা।
এদিকে বুধবার দুপুর থেকে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বরের পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
কোনো ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হলে তাকে হ্যারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় বলে। ২১৯ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি বাতাসের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়কে বলে ‘সুপার সাইক্লোন’।
Advertisement
একজন আবহাওয়াবিদ নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বাংলাদেশে কখন আসবে কী আসবে না, কিংবা কখন আসবে- সেটা জানানোর সময় এখনও আসেনি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা তা বলতে পারব। তবে কোনো ঘূর্ণিঝড় আঘাত করতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকেই ৪ স্থানীয় হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি আগামী ৩ মে (শুক্রবার) ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে সমুদ্রে থাকার সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতি, বৈশিষ্ট্য, তীব্রতা কম বেশি হয়। এখন যে গতিতে এটি এগোচ্ছে, পরে সেই গতিতে নাও এগোতে পারে।
‘ফণী’ ভারতের উপকূল ছুঁয়ে আগামী শনিবার (৪ মে) নাগাদ খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছেন একজন আবহাওয়াবিদ।
৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেতের মানে হলো বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটার তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি।
Advertisement
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র বাংলাদেশে আসার আশঙ্কা আছে, তবে তীব্রতা কী পর্যায়ে থাকবে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওড়িশা উপকূল ঘেঁষে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ অভিমুখে আসতে পারে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর বুধবার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আগামী ৩ মে ভারতের ওড়িশার গোপালপুর ও চাঁদবালি উপকূল এবং পুরির দক্ষিণাঞ্চল অতিক্রম করতে পারে। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ায় রূপ নিয়ে ২০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবাহাওয়া বিভাগ আরও জানায়, ‘ফণী’ বুধবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আরএমএম/এনডিএস/জেআইএম