পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বরুইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল সানজিদা আক্তার মিম (১৪)। বখাটেদের উত্ত্যক্তের হাত থেকে রেহাই পেতে দাদা বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের মুক্তবাংলা চারিপল্লি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সে। কিন্তু সেখানেও নাজিরপুরের সেই বখাটেদের উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে মিম।
Advertisement
এমনই অভিযোগ তুলে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এই মানববন্ধন করা হয়।
মিমের বাবার নাম মো. ইউনুস আলী শেখ। তিনি ঢাকায় চাকরি করেন। তার মা রমিচা বেগম। তার দাদার বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারীর চর শৈলদাহ গ্রামে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘বরুইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রতিটি ক্লাসেই প্রথম স্থান অধিকার করত মিম। গত এক বছর যাবত নাজিরপুরের চর মাটিভাঙা গ্রামের মো. ওমর শেখের ছেলে বাধন শেখ তার তার বন্ধুদের নিয়ে মিমকে উত্ত্যক্ত করত।’
Advertisement
বিষয়টি বাধন শেখের বাবা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবহিত করেন মিমের মা রমিচা বেগম। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। বরং এতে বাধন শেখ ক্ষিপ্ত হয়ে উত্ত্যক্তের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। কাজেই কোনো উপায় না দেখে মিমকে তার দাদার বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারীর মুক্তবাংলা চারিপল্লি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়।
এরপরও বাধন শেখ ও তার বন্ধুরা ক্ষিপ্ত হয়ে আরও হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। এর একপর্যায়ে গত ৪ এপ্রিল মিম স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। ফেরার পথে পূর্বপরিচিত খাদিজা আক্তার (বয়স ১৯, বাবা মো, তোফাজ্জেল হোসেন শিকদার, পূর্ববানিয়ারী, নাজিরপুর) বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে অটোরিকশায় ওঠায়। কিছুদূর যাওয়ার পর পথিমধ্যে বাধন শেখসহ কয়েকজনকে ওই অটোরিকশায় নেয়া হয়। সেখানে বাধন ও তার বন্ধুরা মিমের সঙ্গে অশোভন আচরণ করতে থাকলে মিম চিৎকার করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন এসে বাধন শেখসহ অন্যান্যদের আটকে রাখে। বিষয়টি এলাকায় রটে যায়। পরদিন ৫ এপ্রিল সকাল ৯টায় লোকলজ্জা ও আবারও বখাটেদের আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে মিম।’
মিমের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চিত করতে জোর দাবি জানায় ফোরাম-৯৭ ডেভলপমেন্ট সোসাইটি, মিরপুর গ্র্যাজুয়েট ক্লাব, আডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গার্ডিয়ান সোসাইটিসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন।
পিডি/এমবিআর/এমকেএইচ
Advertisement