ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি।
Advertisement
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নুসরাতকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি নুসরাতকে আমরা বাঁচাতে পারলাম না।
তিনি বলেন, আগুনে তার শরীর পুড়ে কালো হয়ে যায়। প্রথম থেকেই তার বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ ছিল। আজকেও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। আজ রাতে তার মরদেহ হিমঘরে রাখা হবে। সকালে মরদেহের ময়নাতদন্ত করে পুলিশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করবে।
Advertisement
এর আগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। লাইফ সাপোর্টও তেমন কাজ করছিল না। এরপর চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় তিনি শোক প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নুসরাতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নুসরাতের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে।
Advertisement
এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান।
সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
এআর/এসএইচএস/বিএ/আরআইপি