বিনোদন

চারুকলার সেই ছাত্রটি যেভাবে টেলি সামাদ হয়ে গেলেন

নাম তার আবদুস সামাদ। বিক্রমপুরে জন্ম। বড় ভাই বিখ্যাত চারুশিল্পী আব্দুল হাই তাকে প্রভাবিত করতেন শৈশব-কৈশোরে। ভাইয়ের পথ ধরে তিনিও পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়।

Advertisement

ছবি আঁকতে জানতেন, গান করতে জানতেন, অভিনয়টাও পারতেন। তবে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করতেন অভিনয়কেই। বিশেষ করে কৌতুক অভিনয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিনিয়তই কৌতুক অভিনয়ের প্র্যাকটিস করতেন তিনি। সেজন্য ক্যারিয়ার হিসেবে এটাকেই বেছে নিলেন।

এদেশের অভিনয়ের আঙিনায় অত্যন্ত রুচিশীল, মার্জিত, ভদ্র, বিনয়ী স্বভাবের একজন অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার। একজন উচ্চশিক্ষিত তারকা হিসেবেও তিনি শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে।

চারুকলার ছাত্র আব্দুল সামাদ, অভিনয়ের আঙিনায় এসে হয়ে গেলেন টেলি সামাদ। কিন্তু এই নামের রহস্য কী? নামের আগে ‘টেলি’ শব্দটি কেন ব্যবহার করতেন এই অভিনেতা। ভক্ত-অনুরাগী ও সাংবাদিকদের সেই কৌতূহলের জবাব বহুবার দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে টেলি সামাদ নিজের নামের ব্যাপারে বলেছেন, স্বাধীনতার পর পর টেলিভিশনে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন টেলি সামাদ। চলচ্চিত্রে তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শক। সবখানেই তখন তাকে নিয়ে আলোচনা। অনেক দিন পর ভালো একজন কমেডি অভিনেতা পাওয়া গেছে।

হঠাৎ একদিন বিটিভি থেকে তার বাসায় চিঠি এলো। সেটি ছিল একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। সাড়া দিয়ে সেই অনুষ্ঠানে যান তিনি। তখন সেখানেই বিটিভির ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন বলেন, ‘সামাদ শুন, আজ থেকে তোর নাম টেলি সামাদ। সেই থেকেই টেলি সামাদের উত্থান।’

দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চ শিক্ষা নেয়া টেলি সামাদ চাইলেই অন্য যে কোনো কিছুতে ক্যারিয়ার গড়তে পারতেন। কিন্তু কৌতুক অভিনয়কে ভালোবেসে তিনি নেমে পড়েছিলেন অভিনয়ের আঙিনায়ই।

নানা মাধ্যমে অভিনয় করলেও চলচ্চিত্রের টেলি সামাদকেই মানুষ চিনেছে, ভালোবেসেছে। নানা রকম সিনেমায় চার চারটি দশক তিনি মাতিয়ে রেখেছিলেন অভিনয়ে।

Advertisement

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তিনি একজন হাসির ফেরিওয়ালা হয়ে হাসি বিলিয়েছেন মানুষের মনে-অন্তরে। যিনি হাসান তিনি প্রিয়জন। সেই প্রিয়জনের বিরহে তো প্রাণ কাঁদবেই।

টেলি সামাদকে হারিয়ে আজ কাঁদছে বাংলাদেশ; কাঁদছে এ দেশের চলচ্চিত্র।

এলএ/এমকেএইচ