জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর চলচ্চিত্রে (বায়োপিক) অভিনয়ের জন্য বাংলাদেশের অভিনেতা খুঁজছেন পরিচালক শ্যাম বেনেগাল।
Advertisement
বুধবার সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান ভারতের খ্যাতিমান এ চলচ্চিত্র পরিচালক। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সিনেমাটি নির্মিত হবে।
আরও পড়ুন >> বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের জন্য ঢাকায় শ্যাম বেনেগাল
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের নির্মাণ ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতাবার্ষিকীর মধ্যে সম্পন্ন হবে বলেও জানান পরিচালক।
Advertisement
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে কে অভিনয় করবেন- জানতে চাইলে শ্যাম বেনেগাল বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার কাছে এ বিষয়ে কোনো আইডিয়া নেই। কারণ এখানে আসাটাই হচ্ছে এ বিষয়ে আমার প্রথম পদক্ষেপ। মূল বিষয় হচ্ছে, আমরা বাংলাদেশের কোনো অভিনেতাকে খুঁজছি। জানার চেষ্টা করছি, বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে কে হবেন উপযুক্ত অভিনেতা। এটা সহজ কাজ নয়, এটা খুবই কঠিন।’
এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কারা অভিনয় করবেন তা এখনও বলার সময় আসেনি। তবে উনি (শ্যাম বেনেগাল) বলেছেন, অভিনেতা বাংলাদেশ থেকে চুজ করবেন। এ বিষয়গুলো হাইলি টেকনিক্যাল, আমরা এগুলোর জবাব দিতে পারব না। উনিই ঠিক করবেন কাকে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের জন্য নির্বাচন করবেন। যেহেতু উনি পরিচালক। এটা সবসময় পরিচালকের এখতিয়ার।’
শ্যাম বেনেগাল বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে সিনেমা পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আমি গর্বিত। এ ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ইতিহাসের প্রতি সৎ থাকা বড় একটি বিষয়। আমি সেটাই করতে চাই।’
‘এটা হবে জীবনীভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র, এর মধ্যে আরও অনেক কিছু আসবে- এটা একটি জাতির জন্মের কথা বলবে, এর একটি মহাকাব্যিক দিকও থাকবে। এতে ব্যক্তির গল্প থাকবে, যিনি একটা দেশের বিজয় নিয়ে এসেছেন। এছাড়া গ্রিক থিয়েটারের মতো শেষের দিকে ট্র্যাজেডিও থাকবে। এটা হবে অন্য রকম একটা গল্পের চিত্রায়ন। এটা সঠিকভাবে করাটা বেশ কঠিন। কিন্তু আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করব’- বলেন ভারতের পরিচালক বেনেগাল।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, যৌথ প্রযোজনার হলেও সিনেমার পুরো চিত্রায়ন হবে বাংলাদেশে। আমি আশা করি দুই দেশের সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজটি করবেন। তবেই এটা একটা সফল কাজ হবে।
বেনেগাল বলেন, ‘আমরা সবাই আশা করি বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর শেষ নাগাদ ও ২০২১ সালের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির মধ্যেই সিনেমাটির নির্মাণ সমাপ্ত হবে। সিনেমার মূল ভার্সনের ভাষা হবে বাংলা। অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে সেই দেশের ভাষার সাবটাইটেল থাকবে।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আগামী বছরের অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়টাকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে, একই সঙ্গে দলের পক্ষ থেকেও নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।’
২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে দুই দেশের যৌথ প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের যৌথ সিদ্ধান্তে শ্যাম বেনেগালকে এ ছবির পরিচালক মনোনীত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে সহায়তার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে একটি তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকেও সমসংখ্যক সদস্য নিয়ে একটি কমিটি চূড়ান্ত করব।’
তিনি বলেন, ‘এ কমিটি বঙ্গবন্ধু ছবির পরিচালককে সহায়তা করবে। এর বাইরেও তিনি যেভাবে চাইবেন অর্থাৎ ছবি বানানোর স্বার্থে তিনি যেভাবে চাইবেন তাকে সেভাবে সহায়তা করা এবং আরও প্যানেল প্রয়োজন হলে তাকে সহায়তা করবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মুজিববর্ষ শুরু হতে আরও প্রায় এক বছর সময় আছে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এ সময়ের মধ্যে ছবিটি নির্মাণ করা। ইনশাআল্লাহ এটি একটি সাড়া জাগানো ছবি হবে। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীতে প্রদর্শিত হবে।’
সিনেমার পরিচালক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও আলোচনার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ে এসেছেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি (শ্যাম বেনেগাল) আজ (বুধবার) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এ সময় তথ্য সচিব আব্দুল মালেকও উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এমএআর/এমকেএইচ