গণফোরাম ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।
Advertisement
গণফোরামের সিনিয়র নেতারা জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে অনুমতি ছাড়া মোকাব্বির খান গণফোরামের প্যাড ব্যবহার করে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার চিঠি দেয়ার বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর ও গণফোরাম নেতা লতিফুল বারী হামিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য মোকাব্বির খানকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, গণফোরামের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে মতিঝিলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রস্তুতি কমিটির একটি মিটিং রয়েছে। সেখানে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী উপস্থিত থাকবেন। সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করে বহিষ্কারের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এছাড়াও মোকাব্বির খান গণফোরামের প্যাড কীভাবে পেলেন, অফিসের কেউ তাকে প্যাড সরবরাহ করেছেন কি-না সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
Advertisement
মোকাব্বির খানের শপথ নেয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সুব্রত চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও গণফোরাম সংসদে যাওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। মোকাব্বিরের বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ ভবনে মোকাব্বিরকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
এছাড়া গত ৭ মার্চ গণফোরাম ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত আরেক সংসদ সদস্য গণফোরাম নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর শপথ নেন। দলীয় নিয়ম ভেঙে শপথ নেয়ায় তাকেও গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট সাত আসনে জয় পায়। তাদের মধ্যে জোটের অন্যতম শরিক গণফোরাম দুই আসনে জয় পায়। এরমধ্যে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সুলতান মনসুর এবং গণফোরামের নিজস্ব প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে মোকাব্বির খান নির্বাচিত হন।
Advertisement
এছাড়া মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ পাঁচজন বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনকে প্রহসনের উল্লেখ করে সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
তবে জানুয়ারির ৫ তারিখ গণফোরামের এক বর্ধিত সভায় দলের দুই সদস্য এমপি হিসেবে শপথ নিচ্ছেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ড. কামাল।
পরদিন এক সংবাদ বিবৃতিতে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের শপথ গ্রহণ প্রশ্নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিন্দুমাত্র অনৈক্য নেই বরং ৩০ ডিসেম্বর প্রশাসনের পর ভোটের অধিকার এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে জাতীয় ঐক্য আগের চাইতে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ আছে, থাকবে। এখানে আমরা আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের নামে যে প্রহসন হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সেদিনই তা প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এরপর ৭ মার্চ জাতীয় সংসদে গিয়ে শপথ নেন সুলতান মনসুর। তার শপথের সময় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণফোরাম জানায়, ‘গণফোরাম থেকে সংগঠনের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে ২৩০ সিলেট-২ থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান অনিবার্য কারণবশত আগামীকাল (৮ মার্চ) সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিচ্ছেন না।’
এর প্রায় একমাস পর সোমবার (১ এপ্রিল) দলীয় প্যাডে লেখা এক চিঠিতে স্পিকারকে মোকাব্বির জানান তিনি ও গণফোরাম শপথ নিতে আগ্রহী।
এআর/এমএমজেড/পিআর