প্রবাস

রিয়াদ বাংলা স্কুলে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিফা আহসান ও সওদা ইসলামবুশরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান।

Advertisement

এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যালযের বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের ভাইস চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, সিগনেটরি মো. আবদুল হাকিম, বোর্ড সদস্য সফিকুল সিরাজুল হক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী নুর, অভিভাবক মোস্তাক আহম্মদ মণ্ডল সোহেল উল্লাহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোসতাক আহমেদ। কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এহসানুলল রাফিদ আদিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন মুনতাহা আলমগীর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন ফারিয়া হুদা জাকিয়া।

স্বাগত বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আফজাল হোসেন আগত অতিথি এবং শুভানুধ্যায়ীদের অনুষ্ঠানে সমাবেত হয়ে আজকের জাতীয় দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনে সহযোগিতা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতাসহ ত্রিশলাখ শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেন।

Advertisement

বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের সদস্য সফিকুল সিরাজুল হক স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। বোর্ড সিগনেটরি মো. আব্দুল হাকিম তার বক্তব্যে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বধীনতা অর্জনে আত্মহুতি দানকারী বীর শহীদদের অসামান্য অবদানের কথা শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের ভাইস চেয়ারম্যান মো. রফিকুল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো এক অবিসংবাদিত নেতা যিনি পরবর্তীতে জাতির পিতায় অভিসিক্ত হন তার ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে আমাদের স্বাধীনতার বীজমন্ত্রটি লুকিয়ে ছিল। বাঙালি বীরের জাতি। তারা কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেনি। বীরত্বের সঙ্গে মাত্র নয় মাসে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

বিদ্যালয়ের আর্থিক অনুদানের জন্য এবং শেখ রাসেল মডার্ন কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠায় ল্যাবের সব ইকুইপমেন্ট প্রদানে কৃতজ্ঞতায় প্রধানমন্ত্রী ও দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতসহ সব কর্মকর্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে স্বাধীনতা আন্দোলনে আত্মৎসর্গকারী বীর শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। তিনি জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মহাসড়কে বীরদর্পে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়কে গর্বের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আমরা অচিরেই উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে সামিল হবে।

Advertisement

সভাপতি বলেন, বাঙালি জাতির আন্দোলনের ইতিহাস সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার ইতিহাস। সেই ১৭৫৭ সাল থেকে বাঙালি জাতি প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছিল। এক সময় দেশ বিভক্ত হলো কিন্তু বাঙালি জাতির ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। পাকিস্তান নামক হানাদার রাষ্ট্র বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখার নানা অপচেষ্টা করলেও বীর বাঙালি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হয়।

অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রভাষক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ দিলওয়ার হুসাইনের একুশের বই মেলায় প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ ‘নিঃশব্দ প্রেম’ প্রকাশের জন্যে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সম্প্রচার করা হয় এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশেষত্ব ছিল খুদে শিক্ষার্থীদের অঙ্কিত স্বাধীনতার চিত্র প্রদর্শন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত দেশাত্মবোধক সংগীত ও নৃত্য প্রবাসীদের মাঝে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন প্রতিষ্ঠানের ধর্মবিষয়ক শিক্ষক হাবিব মোমানী।

এমআরএম/এমকেএইচ