ফেসবুকে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ভারতীয় এক নারীর কাছ থেকে প্রায় ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক। প্রথমে বুঝতে না পারলেও একে একে টাকাগুলো জমা দেয়ার পর প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
Advertisement
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বামী মারা যাওয়ার পর গড়িয়াহাটে এক অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন ৫১ বছরের বিশাখা চট্টোপাধ্যায় (ছদ্মনাম)। ২০১৭ সালের এপ্রিলে ফেসবুকে নিজের নামে একটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তিনি। পরে সেখানেই এক ব্যক্তির সঙ্গে তার আলাপ হয়।
সেই আলাপেই যে তার ৯০ লাখ টাকা খোয়া যাবে, তা ঘূণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি তিনি। প্রতারণার শিকার হয়ে গত ২৩ মার্চ কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
অভিযোগে বিশাখাদেবী জানান, এ বছরের (২০১৯ সাল) শুরু দিকে ফেসবুকে মণীশ কুমার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মণীশ কুমার নিজেকে ইংল্যান্ডের বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন এবং বলেন তিনি একজন পাইলট। ফেসবুক ছেড়ে তাদের আলাপচারিতা গড়ায় হোয়াটস্অ্যাপেও। পরে বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই মণীশ কুমার একদিন বিশাখাদেবীকে জানান, উপহার হিসেবে তিনি কিছু প্রসাধন সামগ্রী পার্সেল করে পাঠিয়েছেন।
Advertisement
পরবর্তীতে ওই পার্সেল ছাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় শুল্ক হিসেবে বিশাখাদেবীকে ভারতীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের জয়পুর শাখায় জনৈক সেলিম খানের অ্যাকাউন্টে ৪৫ হাজার টাকা জমা করতে বলেন মণীশ। গত ৮ মার্চ সেই টাকা জমা করে দেন তিনি। এরপর মণীশ তাকে ফের জানান, ওই পার্সেলে প্রসাধন সামগ্রী নয়, প্রায় ৭০ হাজার ডলার মূল্যের গয়না রয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৪৮ লাখেরও বেশি। এছাড়া পার্সেলে থাকা গয়নার তথ্য শুল্ক দফতরের কর্মকর্তারা বুঝতে পেরেছেন। ফলে স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে আরও টাকা দিতে হবে।
মণীশের কথা বিশ্বাস করে পরবর্তী দু’সপ্তাহে দফায় দফায় ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ১১টি আলাদা আলাদা ব্যাংকে সাড়ে ৮৯ লাখ টাকা জমা করেন বিশাখাদেবী। তারপরও পার্সেল না আসায় বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, প্রতারকরা পুরো বিষয়টি আরও বিশ্বাসযোগ্য করতে ব্যাংক অব আমেরিকার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে ফোন এবং ইমেলও করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ এখন পর্যন্ত ১১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে, যেখানে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি দু’টি ফোন নম্বরও উদ্ধার করা হয়েছে, যে নম্বর থেকে ব্যাংক অব আমেরিকার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে ফোন করা হয়েছিল।
আরএস/জেআইএম
Advertisement