বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) বয়কট করেছেন সাংবাদিকরা।
Advertisement
সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির নিজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রশ্ন করা এবং বিএসইসিতে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি নিয়ে সাংবাদিক ও বিএসইসির প্রতিনিধিদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে বিএসইসির সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেন সাংবাদিকরা।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়- শেয়ার কারসাজির অভিযোগে বিভিন্ন সময় বিনিয়োগকারীদের জরিমানা করে বিএসইসি। কিন্তু যাকে জরিমানা করা হয় তিনি কারসাজির মাধ্যমে ৫-১০ কোটি টাকা মুনাফা করেন। এর বিপরীতে বিএসইসি ৫-১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে কি কারসাজি বন্ধ করা সম্ভব?
এই প্রশ্নের উত্তরে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিএসইসির প্রতিনিধি বলেন, জরিমানা বা শাস্তির বিষয়টি কমিশনের বিষয়। যদি কমিশন মনে করে জরিমানা করবে, তাহলে করতে পারে। আর যদি মনে করে ক্রিমিনাল অ্যাকশন নিবে, নিতে পারে।
Advertisement
এরপর সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন- আপনারা তদন্তটা ঠিক মতো করছেন কি? আমাদের কাছে তথ্য আছে, কারসাজির মাধ্যমে একজন ৫-১০ কোটি টাকা মুনাফা করে নিয়ে যাচ্ছে। এর বিপরীতে বিএসইসি তাকে ৫-১০ লাখ টাকা জরিমানা করে।
এই প্রশ্ন শুনে বিএসইসির প্রতিনিধি ক্ষেপে গিয়ে বলেন, আপনার কাছ থেকে আমাদের তদন্ত শেখার কিছু নেই। আমাকে মেন্ডেড দেয়া হয়েছে তদন্ত করার, আমি তদন্ত করেছি। আপনার কাছ থেকে আমাকে শিখতে হবে আমি কি তদন্ত করেছি? আমাকে যে ম্যান্ডেট দেয়া হয়েছে, সেটা শিখতে দেন। যতটুকু তথ্য প্রমাণ হাজির হবে তার ভিত্তিতে কমিশন ব্যবস্থা নেবে। কমিশন বসে আছে তা আপনি বলতে পারেন না।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনের মঞ্চে বসে থাকা বিএসইসির আরেক প্রতিনিধি বলেন, অনেক সময় আমাদের পক্ষে শতভাগ তথ্য বের করে আনা সম্ভব হয় না। আমাদের কিছু লিমিটেশন (সীমাবদ্ধতা) আছে। এ লিমিটেশন হল- প্রমাণের ঘাটতি। তদন্ত কর্মকর্তা যদি সঠিকভাবে তথ্য প্রমাণ নিয়ে না আসতে পারে অথবা যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি যদি শুনানিতে তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে পারে, তাহলে শাস্তি কমে যাবে।
এ প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়- আপনারাই স্বীকার করছেন যে, তদন্ত কর্মকর্তারা সঠিকভাবে তদন্ত না করলে শাস্তি সেভাবে হয় না। আবার আপনারা আইনের সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন। ১৯৯৬, ২০১০ আমরা দেখে এসেছি। আইনের সীমাবদ্ধতা দূর করার ক্ষেত্রে আপনারা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন?
Advertisement
এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বিএসইসির প্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলন থেকে উঠে যান। এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়- বিএসইসিতে সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারেন না। অনেক সময় এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা বসে থেকে সাংবাদিকদের চলে যেতে হয়।
এই প্রশ্নে বিএসইসির প্রতিনিধিরা আরও ক্ষেপে যান এবং সংবাদ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে নেমে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে তর্ক শুরু করে। বিএসইসির প্রতিনিধির এমন আচরণের কারণে উপস্থিত সাংবাদিকরা বিএসইসির সংবাদ সম্মেলন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেন।
এমএএস/এমএসএইচ/পিআর