রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলায় নির্বাচনী কাজ শেষে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সাতজনের মধ্যে ছয়জনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের মরদেহ বিজিবি ও পুলিশি পাহারায় খাগড়াছড়িতে নেয়া হয়। রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছুফিউল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এখানে একের পর এক হত্যাকাণ্ডে আমরা বেশ চাপের মধ্যে রয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কাজ করছি। সাতজন নিহতের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত শেষে মামলা করা হবে।
বাঘাইছড়ি থানা পুলিশের ওসি আবদুর মনজুর জানিয়েছেন, বর্তমানে বাঘাইছড়ি হাসপাতালে পাঁচজন চিকিৎসাধীন। অন্যদের চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সিএমএইচে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ ও পুলিশ সুপার আলমগীর কবির সকালে বাঘাইছড়ি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তারা আহতদের খোঁজ-খবর নেন।
জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে আমরা জেলাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করেছি।
খাগড়াছড়ি সেনাবাহিনীর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই নৃশংস ঘটনা খুবই দুঃখজনক। পাহাড়ে দ্রুত চিরুনি অভিযান চালানো হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যৌথবাহিনী কাজ করবে। পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িতদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না।
এদিকে, সন্ত্রাসীদের হামলায় সাতজন নিহতের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই মঙ্গলবার সকালে বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তার মরদেহ রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে এনে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিলাইছড়ি থানা পুলিশের এসআই এসএম সাইফুল্লাহ।
Advertisement
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন জেএসএসকে দায়ী করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর।
দুইদিনের এ ঘটনায় জেলাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ঘটনায় রাঙ্গামাটির আঞ্চলিক দলগুলো একে অন্যকে দায় করলেও কেউ বিষয়টি স্বীকার করছেন না।
সোমবার দ্বিতীয় ধাপে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে বাঘাইছড়িতে জাতীয় রাজনৈতিক দলের কোনো প্রার্থী ছিল না। এখানে আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (সন্তু লারমা) সমর্থিত প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) শীর্ষ নেতা সুদর্শন চাকমা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
বাঘাইছড়িতে নির্বাচন শুরু হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (সন্তু লারমা) সমর্থিত প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা বিভিন্ন অভিযোগ এনে ভোটবর্জন করেন।
এদিকে, বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (সন্তু লারমা) সমর্থিত প্রার্থী বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যার কাছে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা।
সাইফুল উদ্দীন/এএম/আরআইপি