রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসানে হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ও জেএমবির অন্যতম শূরা সদস্য মো. মামুনুর রশিদ ওরফে রিপন ওরফে রেজাউল করিম ওরফে রেজাকে আদালতে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (হাজিরা পরোয়ানা) জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ ওয়ারেন্ট জারি করেন।
Advertisement
আজ মঙ্গলবার এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। সেই অনুযায়ী তিনজন সাক্ষী আদালতে হাজির হন সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য। তবে এ মামলায় পলাতক আসামি মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। এজন্য রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আসামি মামুনুর রশীদকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারির আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি মঞ্জুর করে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২১ মার্চ দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১৯ জানুয়ারি গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকা থেকে রেজাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। পরদিন ২০ জানুয়ারি তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় সবুজবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম কনক বড়ুয়া পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
Advertisement
২৬ জানুয়ারি পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন রেজা। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিসানে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তখন তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হন। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।
২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। মামলার আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।
এ ছাড়া বিভিন্ন অভিযানে ১৩ জন নিহত হওয়ায় তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়। এদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন অভিযানে ও পাঁচজন হলি আর্টিসানেই নিহত হন।
Advertisement
হলি আর্টিসানে সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’-এ নিহত পাঁচ হামলাকারী হলেন- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।
এছাড়া এ মামলায় আসামিদের মধ্যে বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানে নিহত আটজন হলেন- তামীম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।
জেএ/আরএস/জেআইএম