বৃহস্পতিবার সকালে এমপি হিসেবে শপথ নিয়েই সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে বক্তব্য রেখেছেন ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। তিনি বলেন, সংসদে আমিই বোধহয় একজন নীলমণি যে বর্তমানে জোটের বাইরে অন্য জোট থেকে নির্বাচিত হয়েছি এবং শত প্রতিকূলতার মধ্যেও মৌলভাবাজর-২ আসনের কুলাউড়া মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এখানে এসছি। এ জন্য সরকারপ্রধান হিসেবে আজকে সংসদনেত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
Advertisement
এদিন সংসদে ৭ মার্চ উপলক্ষে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। সুলতান মনসুর বলেন, নির্বাচনে অন্তত আমার নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অন্য এলাকায় কী ঘটেছে জানি না। অন্যরা তাদের বিবেকের আদালতে তারাই বলতে পারবেন।
তিনি বলেন, আজ আমারও কিন্তু ওইখানে থাকার কথা ছিল। অর্থাৎ যদি ওই জোটের পক্ষ হয়ে রাজনীতি করতাম। আজ থেকে ১৮ বছর আগে এই সংসদে আমার আসার সুযোগ হয়েছিল। আপনি (স্পিকার) যে আসনে বসে আছেন ওই আসনে বসেছিলেন মরহুম আলহাজ হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। আর ছিলেন আজকের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সাহেব। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, রাজনীতির ছন্দপতনের কারণে হয়তো আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমি একটি রাজনৈতিক কারাগারের মধ্যে ছিলাম। গত ১৮ বছরে যদিও আমি এমপি ছিলাম না বা এইখানে ছিলাম না তবে আমি রাজনৈতিকভাবে চিন্তার দিক দিয়ে নিষ্ক্রিয় ছিলাম না।
তিনি আরও বলেন, আর যে বিশ্বাস নিয়ে আজ ৭ মার্চ যাকে নিয়ে আলোচনা ১৯৬৭-৬৮ সালে স্কুলছাত্র থাকা অবস্থায় যাকে ঘিরে, যার স্লোগান দিয়ে রাজনীতি জীবন শুরু করেছিলাম- পদ্মা, মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা, জেলের তালা ভাঙবো শেখ মুজিবকে আনবো, মিথ্যা-অসত্য ষড়যন্ত্রমূলক মামলা মানি না মানবো না। সেই জায়গা থেকে সেই বিশ্বাস থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিচ্যুত হয়নি। যদিও জোটগতভাবে বা রাজনৈতিকভাবে বর্তমানে হয়তো আমার নেতাদের সঙ্গে ওই জোটে নেই। কিন্তু আজ থেকে ৫২ বছর আগে যে বিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলাম, সেই বিশ্বাসে জায়গা থেকেই আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে নির্বাচন করে আপনাদের সকলের দোয়াতে এই জাতীয় সংসদে এসেছি। তাই আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার সংসদীয় আসন মৌলভীবাজার-কুলাউড়ার জনগণকে।
Advertisement
সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, মহাজোটের বিরোধী যারা ছিলেন তারাও আমাকে ভোট দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর অনুসারী, জাতির পিতার অনুসারীরাও আমাকে ভোট দিয়ে সর্বস্তরের জনগণ আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। কারণ আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে।
তিনি বলেন, অনেকের মনঃপুত বক্তব্য হয়তো আমি আজ না রাখতে পারি। তবে আশা করবো অন্য জোটের ব্যক্তি হয়ে যাতে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি, জনগণের কথা বলতে পারি, বাংলার মানুষের কথা বলতে পারি, সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে পারি। তবে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু এই প্রশ্নে কোনো আপস নেই।
এইচএস/বিএ
Advertisement