দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে মৌলভীবাজার-২ আসনে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর এখন ঘরে-বাইরে আলোচনায় রয়েছেন।
Advertisement
শপথ নিয়ে নিজ দলে-জোটে যেমন সমালোচিত হচ্ছেন তিনি, আবার দল থেকে যদি তাকে বহিষ্কার করা হয় তবে শেষ পর্যন্ত তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে থাকতে পারবেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
আজ বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজ কার্যালয়ে মনসুরকে শপথ করান। আজই গণফোরাম থেকে নির্বাচিত আরেক নেতা সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খানেরও শপথ নেয়ার কথা ছিল। তবে গতকাল তিনি সিদ্ধান্ত বদল করেন।
তবে সুলতান মনসুরের এই শপথ নেয়ার বিষয়টিকে মোটেই ভালো চোখে দেখছে না তার দল গণফোরাম। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মণ্টু এ বিষয়ে বলেন, দলের বাইরে গিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আজ বিকেলে আমরা বসবো। ড. কামালও থাকবেন। সেখানে আমরা আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
Advertisement
গণফোরামের শীর্ষনেতা এবং মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর লতিফুল বারী হামিম বলেন, উনি গণফোরামের গণতন্ত্র মেনে এনে এই দলে যোগদান করেছিলেন। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এখন কার ইশতেহার ধারণ করে তিনি সংসদে গেলেন সেটা একমাত্র তিনিই বলতে পারবেন।
লতিফুল বারী আরও বলেন, আমাদের ধারণা উনি বিশেষে প্রলোভনে এবং বিশেষ স্বার্থ হাসিলের জন্য সংসদে গেছেন। এ জাতীয় রাজনীতিবিদদের ধিক্কার ও ঘৃণা জানানো উচিৎ। সরকারের ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সংসদে গেছেন। জনগণের পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ আমরা আশা করছি। কোনো রাজনীতিবিদ যেন এ ধরনের কাজ যেন ভবিষ্যতে করতে না পারে। সেজন্য তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ এবং কঠোর ব্যবস্থার ঘোষণা আসতে পারে।
সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করা হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বহিষ্কার করলে তো সব শেষ। প্রথমে তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোসহ নানা আইনি পদক্ষেপের চিন্তা করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাকে কারণ দর্শাতে সময় দেয়া হবে। এরপর তার উত্তরের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, রাজনীতিতে মানুষের সঙ্গে ছলনা করে, অঙ্গীকার ভঙ্গ করে শপথ নেয়ায় তিনি গণশত্রুতে পরিণত হবেন। দল সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
Advertisement
ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মনসুর এক সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। জরুরি অবস্থার সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে দলে অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ার পর তিনি কামাল হোসেনের সঙ্গে ভেড়েন। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গণফোরাম গঠনকারী কামাল হোসেন কয়েক বছর আগে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নামে একটি ফোরাম গড়ে তোলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে জোট বাঁধার সময় গণফোরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া দুটোই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়।
এআর/এনএফ/জেআইএম