বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল কুদ্দুস অবশেষে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বুধবার এলাকা ছাড়েন তিনি।
Advertisement
তবে ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানিয়েছেন, এক মাস আগেই পদোন্নতি পেয়ে বরিশালে বদলি হন আব্দুল কুদ্দুস। বুধবার তাকে স্বাভাবিক নিয়মেই ভোলা থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। পারিবারিক কিছু ঝামেলার কথা শুনেছেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
স্থানীয়রা জানান, ইউএনও আব্দুল কুদ্দুস বোরহানউদ্দিনে ইউএনও থাকা অবস্থায় একের পর এক ঘটনায় আলোচিত হন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, স্টাফকে লাঠি দিয়ে মারধর করে হাত ভেঙে ফেলা, ফেসবুকে লেখালেখির আক্রোশে এসএসসি পরীক্ষার্থী রুবায়েদ ওয়াদুদ গল্পকে পরীক্ষার হলে লিখতে না দিয়ে নাজেহাল করা, নিজের তৈরি উপজেলা প্রশাসন স্কুলের নামে প্রভাব বিস্তার করা, নিজের তৈরি তেঁতুলিয়া ইকোপার্কে রাতে অবস্থান, আড্ডা দেয়া, খেলার মাঠে দর্শনার্থীদের মারধর করা, এক বছরে নিজের নামে পাঁচটি বই প্রকাশ করা। এছাড়া পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এক বছর আগে বদলি হলেও তদবির করে বদলি ঠেকানোরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ গত মাসে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে বরিশাল বদলি হন। কিন্তু তিনি ওই পদেও যোগ দিতে গড়িমসি করতে থাকেন। তার কিছু কাজ বাকি আছে, ওই কাজ শেষ করতে কিছু সময় বোরহানউদ্দিন থাকা প্রয়োজন এমনটা দাবি করে জেলা প্রশাসকের কাছে সময় চান ইউএনও।
Advertisement
এরই মধ্যে ইউএনও থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে কাজে যোগ দেন তার স্ত্রী আফরোজা পারুল। তিনি স্বামী কুদ্দুসের বোরহানউদ্দিনে অবস্থানকে ভালো চোখে না দেখে দুইদিন আগে ছুটে যান ওই এলাকায়।
বুধবার ইউএনও কুদ্দুস মোবাইল ফোন রেখে অফিসে গেলে ওই মোবাইল ফোনে কিছু আপত্তিকর ছবি দেখে ক্ষুব্ধ হন স্ত্রী। ঘরের কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর করার পাশাপাশি ইউএনও কুদ্দুস বোরহানউদ্দিন ছেড়ে যাবে কি-না জানতে অফিসে ছুটে যান স্ত্রী।
খবর পেয়ে ইউএনও কুদ্দুস অফিস থেকে বের হয়ে এলে উপজেলা পরিষদের রাস্তায় স্ত্রীর সঙ্গে প্রকাশ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় ইউএনও স্ত্রীকে সামাল দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এসব দৃশ্যের ভিডিও ফুটেজ মুহূর্তে ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আহম্মেদ উল্লাহ মিয়াসহ স্থানীয়রা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।
Advertisement
এ বিষয়ে আহম্মদউল্লাহ মিয়া বলেন, তাদের স্বামী-স্ত্রীর ধস্তাধস্তির পরিবেশ ভালো ছিল না। একপর্যায়ে ম্যাডাম পারুল অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। পরে খবর পেয়ে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারাও ছুটে যান। এমন পরিস্থিতিতে ইউএনওকে পদোন্নতির কারণে ভোলা ছাড়তে বাধ্য করেন জেলা প্রশাসক।
এএম/এমএস