জাতীয়

২৯ দাহ্য পদার্থের তালিকা ধরে অভিযান চলবে

পুরান ঢাকার আবাসিক ভবনগুলো থেকে ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল সরানোর লক্ষে টাস্কফোর্সের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

Advertisement

বুধবার ডিএসসিসির নগর ভবনে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ অডিটরিয়ামে ‘পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা, সংকট ও সম্ভাবনা : করণীয় ও বর্জনীয়’ শীর্ষক এক মুক্ত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাঈদ খোকন বলেন, পুরান ঢাকার দুর্ঘটনায় সেই দিনের বিভৎস দৃশ্য আমি দেখেছি। এমন ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা চাই ক্ষতিকর কেমিক্যাল কারখানা যেন এখানে না থাকে। আমরা চাই, ঝুঁকি নিরসন করে সবার নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে এ টাস্কফোর্স। যখন টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে তখন তার কার্যপরিধিও নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কিন্তু এমনও ঘটানা ঘটেছে যে অভিযানে যাওয়া কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় আমরা আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতাম কিন্তু আমরা চেয়েছি আলোচনার মাধ্যমে এটার সমাধান হোক। সেজন্যই আজ বসেছি। কিন্তু কারখানা সরিয়ে নেয়ার স্থায়ী জায়গায় যাওয়ার আগ পর্যন্তও এখানে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল রাখা যাবে না।

Advertisement

মেয়র বলেন, এখানে প্লাস্টিকের সঙ্গে রাসায়নিক ভয়বহতার একটা সংমিশ্রণ হয়ে গেছে। এ সময় মেয়র বিস্ফোরক অধিদফতরকে নির্দেশ দেন- এ পদার্থগুলো অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কি না, তা দেখতে। রিপোর্ট অনুযায়ী টাস্কফোর্স ব্যবস্থা নেয়া নেবে।

তিনি বলেন, ২৯টি পদার্থের চেয়ে আরও অনেক রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে, সেগুলো দাহ্য পদার্থ। অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ অপসারণ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কিন্তু কোনোক্রমে কোনো ব্যবসায়ীকে হয়রানি বা ক্ষতিকর দাহ্য পদার্থ নয় এমন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর আমাদের এখান থেকে কেমিক্যাল কারখানা সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু যে কোনো কারণে তা হয়নি। এখন সরাতে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ধাক্কা দিয়ে তো বের করে দেয়া যাবে না। এগুলো ঢাকা থেকে দূরে নয় আশপাশে ব্যবস্থা করতে হবে। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রয়েছে। নয় বছর আগে ব্যবসার ধরণ যা ছিল এখন আরও বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, এখন অগ্নিকাণ্ডের জন্য ক্ষতিকর ২৯টি দাহ্য পদার্থের তালিকা করা হয়েছে। প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আরও যদি পাওয়া যায় তাহলে আপনারা তা সরিয়ে নেবেন। এ ছাড়া স্থায়ীভাবে এখান থেকে চলে যেতে ব্যবসায়ীরা রাজি আছেন। কিন্তু তার আগে তো আর ব্যবসা বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না। জায়গা দিলেই তারা চলে যাবে। তার আগ পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যালগুলো আপনারা সরিয়ে ফেলুন। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত আরও একটা যদি দুর্ঘটনা ঘটে যায় তখন ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। তাই আপনারা সচেতন হোন। সরিয়ে নেন এসব ক্ষতিকর ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল।

Advertisement

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুর রহমান, ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহম্মাদ ফেরদৌস খান, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ ফজলে শাহীনসহ পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমিতির প্রতিনিধিরা।

এএস/জেডএ/এমএস